অনলাইন এ নবাগত দ্বীনী ভাই-বোনেরা বর্তমানে সবচেয়ে বড় যে ফিত্নার মাঝে হাবুডুবু খাচ্ছে তা হল -যার তার কাছ থেকে, যেখান সেখান ইল্ম অর্জনের দিকে ধাবিত হওয়া! তাছাড়া অনেকেই আলেমদের ছেড়ে দিয়ে মোডারেট দ্বায়ীদের পিছনেও দৌড়ানো শুরু করছে!
কেউ কেউ আবার এসকল মাজহুল ব্যক্তিদেরকে জিহাদি আলেম/ মুজাহিদ মুফতি/ওলামায়ে হক্ব টাইটেল লাগিয়ে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর ফেলছেন!
এসব গুপ্ত ঘাতক রা মুলত লোকদেরকে নিজেদের দিকে আকৃস্ট করতে প্রথমে কুরআন ও হাদীস নিয়ে কিছু হাওয়ালা দেয়! এরপর ইউটিউব বা ইন্টারনেটে কিছু ওয়াজ-লেকচার ছেড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে!
তারপর ফেইসবুক, টুইটারে কয়েক লক্ষ লাইক, ফলোয়ার বা একনিষ্ঠ মুরীদ জোটাতে পারলেই শুরু হয় তাদের বিষাক্ত মিশন!
যেহেতু আজকালকার ২০/২৫ বছরের যুবকদের রক্ত টগবগে গরম থাকে!তাই তাদের এই উইকনেস কে কাজে লাগাতে কৌশলে হৃদয় গলানো বা গরম গরম আবেগী বক্তৃতা দিয়ে বা মনভুলানো কিছু লেখালিখি করে মানুষের মগজ ধোলাই করে!
ঠিক তেমনি একজন চরমপন্থি মাজহুল ব্যক্তি "তামিম আল আদনানি"র ভিডিও গুলো ইদানীং ভাইরাল হচ্ছে!একটি মহল সু-পরিকল্পিতভাবে "Ummah Network" নামক চ্যানেলের মাধ্যমে চারদিকে তার খন্ড খন্ড মনভোলানো বক্তব্য গুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে! ইমরশোনাল স্পিচ, মনোমুগদ্বকর প্রেজেন্টেশন আর সমসাময়িক বিষয়ভিত্তিক বক্তব্যের সাথে আরবী নাশিদের ব্যাকসাউন্ড দিয়ে সহজেই যুবকদের আকৃস্ট করে ফেলছে! দুই চারটা সহীহ্ কথার আড়ালে বক্তা এমন ভাবে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আর হাদিসের অপব্যাখা যোগ করে দেন,তাতে সাধারন মানুষ বিভ্রান্ত হতে বাধ্য!
আমরা যারা সাধারণ মানুষ, দ্বীন সম্পর্কে, কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে জ্ঞানী না, তাদের সামনে যদি একজন মূর্খ লোকও সামান্য কিছু পড়াশোনা করে আলেমের লেবাস ধরে, আমরা কিন্তু ধরতে পারবোনা এই লোকটা আসলেই কি একজন আলেম? নাকি আলেম না হয়েও আলেম সেজে আমাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে? যেমন একজন জুহুরীই কেবলমাত্র চিনতে পারে কোনটা আসল রত্ন কোনটা সস্তা পাথর, একজন স্বর্ণকারই চিনতে পারে কোনটা খাঁটি স্বর্ণ আর কোনটা সিটি গোল্ড বা ইমিটেশান। রাইট?
ঠিক তেমনি একজন প্রকৃত আলেমই আসলে চিনতে পারেন, কে আলেম আর কে জাহেল (মূর্খ)।
আজ মনে পড়ে গেল জার্মানির খলনায়ক হিটলারের কথা! তার বক্তৃতার মধ্যেও যাদু ছিল। মানুষ বক্তব্য শুনেই মুগ্ধ হয়ে যেতো। যেকারণে সামান্য একজন সৈনিক হওয়া স্বত্বেও হিটলার জার্মানির শাসক হতে পেরেছিল! সেইজন্য ই দেখতে হবে, যার ব্যপারে কথা হচ্ছে, তার ব্যপারে তার পূর্বে বা তার সময়কার যারা “আলেম” ছিলেন, তারা কি তাকে একজন আলেম বলে মনে করতেন, নাকি জাহেল (মূর্খ) বলে মনে করতেন?
আমাদেরকে একটা বিষয় বুঝা উচিত-“ইলম” বা দ্বীনের জ্ঞান আকাশে বাতাসে ঘুরে বেড়ায় না, যার ইচ্ছা ওখান থেকে নিয়ে সে আলেম হয়ে যাবে। সকল যুগের শ্রেষ্ঠ আলেমগন গর্তে/জংগলে/পর্দার অন্তরালে কখনোই লুকিয়ে ছিলেন না! বরং তারা সরাসরি মানুষের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা করতেন এবং সরাসরি লোকালয়ে দ্বীনের দাওয়াত দিতেন!
সেইজন্যই আলেমরা মাজহুল ব্যক্তি যে কিনা প্রকৃত আহলে সুন্নত নাকি আহলে বিদআতের লোক , আলেম নাকি জাহেল, এই বিষয়গুলো ভালোভাবে যাচাই না করে তার কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান নিতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
এই ব্যপারে ইমাম শু’বাহ রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যুঃ ১৬০ হিজরী) বলেন, “ইলম তার কাছ থেকেই নাও, যে ব্যক্তি পরিচিত।”
[আল-জারহ ওয়াত-তা’দীলঃ ২/২৮]
---
কে এই তামিম আল আদনানি? কি তার আকিদা, মানহাজ? কি তার পরিচয়?কি তার পড়াশোনা?
কারা তার উস্তাদ? সে কি বাংলাদেশি নাকি আরবীয়?
তাকে সম-সাময়িক কোন আলেম চিনেন কিনা, বা তিনি আলেমদের কাছ থেকে দ্বীন শিখেছেন কিনা, তাঁদের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেন কিনা অথবা ওলামাদের, সহবতে ছিলেন কিনা, এসব বিষয়াদি না জেনেই এমন ব্যক্তি থেকে আপনি অন্ধের মত কি করে দ্বীনের জ্ঞান নিচ্ছেন? এ প্রসঙ্গে একজন সালাফ বলেছিলেন-দ্বীনের ব্যপারে “প্রকৃত আলেম” ছাড়া অপরিচিত, অজ্ঞ লোকদেরকে আলেম মনে করে তাদের কথা বিশ্বাস করবেনা। যদি করো, তাহলে যেন তুমি তোমার দ্বীনকেই ধ্বংস করলে"!
আমাদের অনুসন্ধানে "আদনানি" নামক এই প্রানীর অস্তিত্ব নিয়েই সন্দেহ রয়ে গেছে , হয়ত এই নামটি সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে দেশের চরমপন্থি গ্রুপগুলো যুবকদের ব্রেনওয়াশ করছে!, যাহোক
এই আদনানি মুলত ‘সালফে সালেহীন’ (সাহাবীদের) আক্বীদাহ (ধর্মীয় বিশ্বাস) ও মানহাজে (কর্ম পদ্ধিত বা চলার নীতিতে) বিশ্বাসী নয়। অনেক সময় সে মনভোলানো যুক্তি ও কথার দ্বারা আহলে সুন্নাহর বিরোধীতা করে এবং কৌশলে তার ভক্ত-শ্রোতাদেরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে।
®আল কায়েদা ও আদনানী ঃ--
চরমপন্থি খারিজি সংগঠন আল কায়েদার সাথে তামিম আল আদনানীর সখ্যতা বেশ পুরানো!
এ বিষয়ে "কেন আল কায়েদাতে যোগ দিলাম" শিরোনামে আদনানীর ঘণ্টাব্যাপী লেকচার রয়েছে!
সেখানে সে স্পটভাবে আল কায়েদাতে যোগদান এবং উসামা বিন লাদেন কে " শহিদ "হিসেবে উল্লেখ্য করে নিজেকে তার মতাদর্শের হিসেবে উপস্থাপন করেন!
লিংক--- http://ia802604.us.archive.org/0/items/spostorupebornonakorun_590/KenoAqKeGrohonKorlam.mp3
শুধু আল কায়েদাতে যোগ দিয়েই ক্ষান্ত হয় নি বরং কালো পতাকার হাদিস গুলোকে আল কায়েদার দিয়ে ফিট করে যুবকদের এই খারিজি সংগঠনের যোগদানের আহবান জানিয়েছেন!
কোরআনের আয়াতের অপব্যখ্যার পাশাপাশি হাদিসের
ক্ষেত্রেও এই মিস্কিনের র্ধৃস্টতা চোখে পড়ার মত!
যাহোক তার কালো পতাকা সম্বলিত হাদিস গুলোর জালিয়াতির জবাব দিয়েছেন ফজিলাতুস শাইখ ড.মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মাদানি হাফিঃ।
লিংক--- https://youtu.be/ODJRQ6HWamI
আল কায়েদার ব্যাপারে আরব ওলামাদের অবস্থানঃ
খাওয়ারিজদের সংগঠন "আল-কায়েদা" নেতা ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন আল্লামাহ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, "ওসামা বিন লাদেন হচ্ছে এমন এক ব্যক্তি যে কিনা পৃথিবীর উপর ফিতনা ছড়াচ্ছে, এবং ধংস আর অকল্যাণের পথে হাঁটছে। এবং সে নেতৃবৃন্দ ও শাসকদের সাথে বিদ্রোহ করেছে এবং তাদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।"
(আল-মুসলিমুন এবং আল-শারক আল-আওসাত পত্রিকাসমূহ থেকে নেয়া হয়েছে সময়কাল ছিল আরবি মাস জমাদাউল উলা, ১৪১৭ হিজরি, বা ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ)।
ইয়েমেনীয় দারুল হাদিস দাম্মাজের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামাহ
মুকবিল ইবন হাদি আল-ওয়াদি রাহিমাহুল্লাহ , কুয়েতি আল-রায়ু আল-আম (ইস্যু নং ১১৫০৩, ১২/১৯/১৯৯৮) পত্রিকাকে এক সাক্ষাতকারে বলেন, “এইখানে, আল্লাহ্র সামনে, আমি নিজেকে বিন লাদেন থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি, কেননা সে গোটা মুসলিম জাতির জন্য বিপজ্জনক, আর তার কার্যকলাপ জঘন্য”
বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আল্লামাহ আব্দুল্লাহ মহসিন আল আব্বাস হাফি: বলেন-- আল কায়েদা হল জমিনের বুকে একমাত্র ফিতনা সৃস্টিকারী দল! এরা যে চরমপন্থি এতে কোন সন্দেহ নেই!
লিংক-- https://youtu.be/nSsKaGMaCnc
আল্লামাহ মুকবিল বিন হাদি আল ওয়াদি রাহি: আরও বলেন ওসামা বিন লাদেন হল খাওয়ারিজদের নেতা! এই উম্মাহ তাকফিরের মত যেসব বিপর্যয়ের মুখোখুখী হয়েছে তার জন্য সে দায়ী-
লিংক-- https://youtu.be/BO7BcXTc4zw
ফজিলাতুস শাইখ রমাজান আল হাজিরি হাফিঃ বলেন-- আল নুসরা,বোকো হারাম, আল কায়েদা ইত্যাদি সংগঠন গুলো জিহাদের নামে জমিনে ফিত্নার দার উন্মুক্ত করেছে! কোন সন্দেহ নেই, এরাই হল জাহান্নামের কুকুর!
লিংক--- https://youtu.be/4dwlFMkhl2I
শাইখ সালমান আল আওদাহ, যে কিনা এক সময় আল কায়েদার সাথে জড়িত ছিল সেই আওদাও ২০০৭ সালে ওসামাকে হাজার হাজার মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে বিবৃতি দিয়েছিল! এবং নিজেকে তার থেকে মুক্ত ঘোষণা করেছিল! যেহেতু আইএস, আল কায়েদা ও সমমনা দলগুলো খারেজী এবং ফিতনা সৃষ্টিকারী। এইসব বিষয়ে আহলুল সুন্নাহর উলামারা সবাই একমত। ইন্ডিয়ার বিখ্যাত বক্তা ও দাঈ ব্রাদার ইমরান (হাফি) ৫০ জন শীর্ষস্থানীয় উলামার ফাতওয়া ও বিভিন্ন দলিল এনেছে আল কায়েদার বিরুদ্ধে। যাতে সমস্ত ওলামারা বলেছেন এরা খারিজি সংগঠন!
লিংক--https://m.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=krIVzME_Jkk
®সর্বশেষ নসিহতঃ
সাহাবীদের পর থেকে তাবেয়ীদের যুগ থেকে,
যখন থেকে মুসলমানদের মাঝে “উলামায়ে ছু” (মন্দ বা
পথভ্রষ্ট আলেম) ও আয়াম্মায়ে দ্বোয়াল্লিন (পথভ্রষ্ট
ইমাম বা নেতা) মুসলিম উম্মাহর মাঝে প্রবেশ করেছে,
তখন থেকেই আমাদের আলেমরা বার বার সতর্ক করে
গেছেনঃ ইসলাম শেখার জন্য যাকে-তাকে “উস্তাদ” বা
শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ না করার জন্য।
এইসব চরমপন্থি বক্তা কিছু ভাল কথার আড়ালে তাদের ‘জাহালত’ (অজ্ঞতা) ও ‘দ্বোয়ালালাহ’ (ভ্রষ্টতা) লুকিয়ে রাখে, যার দ্বারা আপনি, আমি বিভ্রান্ত হতে বাধ্য!
তাই নবাগত দ্বীনী ভাইগন হ্যামিলনের বাশিওয়ালা নয় বরং সালাফদের মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত আলেমদের থেকে ইল্ম হাসিল করুন।
এক্ষেত্রে বিখ্যাত তাবি'ঈ ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু সীরন রাহঃ র সেই বিখ্যাত উক্তি টি আবারো স্বরন করিয়ে দিচ্ছি! তিনি বলেছেন- "নিশ্চয়ই এ ইল্ম হলো দ্বীনের অন্তভূক্ত! কাজেই কার কাছ থেকে তোমরা দ্বীন গ্রহণ করছে তা যাচাই করে নাও। (অর্থাৎ সত্যবাদী, দ্বীনদার এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির কাছ থেকে দ্বীনের ইল্ম নেওয়া অবশ্যক)
#প্রচারে___সুন্নাহর___পথযাত্রী
কেউ কেউ আবার এসকল মাজহুল ব্যক্তিদেরকে জিহাদি আলেম/ মুজাহিদ মুফতি/ওলামায়ে হক্ব টাইটেল লাগিয়ে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর ফেলছেন!
এসব গুপ্ত ঘাতক রা মুলত লোকদেরকে নিজেদের দিকে আকৃস্ট করতে প্রথমে কুরআন ও হাদীস নিয়ে কিছু হাওয়ালা দেয়! এরপর ইউটিউব বা ইন্টারনেটে কিছু ওয়াজ-লেকচার ছেড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে!
তারপর ফেইসবুক, টুইটারে কয়েক লক্ষ লাইক, ফলোয়ার বা একনিষ্ঠ মুরীদ জোটাতে পারলেই শুরু হয় তাদের বিষাক্ত মিশন!
যেহেতু আজকালকার ২০/২৫ বছরের যুবকদের রক্ত টগবগে গরম থাকে!তাই তাদের এই উইকনেস কে কাজে লাগাতে কৌশলে হৃদয় গলানো বা গরম গরম আবেগী বক্তৃতা দিয়ে বা মনভুলানো কিছু লেখালিখি করে মানুষের মগজ ধোলাই করে!
ঠিক তেমনি একজন চরমপন্থি মাজহুল ব্যক্তি "তামিম আল আদনানি"র ভিডিও গুলো ইদানীং ভাইরাল হচ্ছে!একটি মহল সু-পরিকল্পিতভাবে "Ummah Network" নামক চ্যানেলের মাধ্যমে চারদিকে তার খন্ড খন্ড মনভোলানো বক্তব্য গুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে! ইমরশোনাল স্পিচ, মনোমুগদ্বকর প্রেজেন্টেশন আর সমসাময়িক বিষয়ভিত্তিক বক্তব্যের সাথে আরবী নাশিদের ব্যাকসাউন্ড দিয়ে সহজেই যুবকদের আকৃস্ট করে ফেলছে! দুই চারটা সহীহ্ কথার আড়ালে বক্তা এমন ভাবে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আর হাদিসের অপব্যাখা যোগ করে দেন,তাতে সাধারন মানুষ বিভ্রান্ত হতে বাধ্য!
আমরা যারা সাধারণ মানুষ, দ্বীন সম্পর্কে, কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে জ্ঞানী না, তাদের সামনে যদি একজন মূর্খ লোকও সামান্য কিছু পড়াশোনা করে আলেমের লেবাস ধরে, আমরা কিন্তু ধরতে পারবোনা এই লোকটা আসলেই কি একজন আলেম? নাকি আলেম না হয়েও আলেম সেজে আমাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে? যেমন একজন জুহুরীই কেবলমাত্র চিনতে পারে কোনটা আসল রত্ন কোনটা সস্তা পাথর, একজন স্বর্ণকারই চিনতে পারে কোনটা খাঁটি স্বর্ণ আর কোনটা সিটি গোল্ড বা ইমিটেশান। রাইট?
ঠিক তেমনি একজন প্রকৃত আলেমই আসলে চিনতে পারেন, কে আলেম আর কে জাহেল (মূর্খ)।
আজ মনে পড়ে গেল জার্মানির খলনায়ক হিটলারের কথা! তার বক্তৃতার মধ্যেও যাদু ছিল। মানুষ বক্তব্য শুনেই মুগ্ধ হয়ে যেতো। যেকারণে সামান্য একজন সৈনিক হওয়া স্বত্বেও হিটলার জার্মানির শাসক হতে পেরেছিল! সেইজন্য ই দেখতে হবে, যার ব্যপারে কথা হচ্ছে, তার ব্যপারে তার পূর্বে বা তার সময়কার যারা “আলেম” ছিলেন, তারা কি তাকে একজন আলেম বলে মনে করতেন, নাকি জাহেল (মূর্খ) বলে মনে করতেন?
আমাদেরকে একটা বিষয় বুঝা উচিত-“ইলম” বা দ্বীনের জ্ঞান আকাশে বাতাসে ঘুরে বেড়ায় না, যার ইচ্ছা ওখান থেকে নিয়ে সে আলেম হয়ে যাবে। সকল যুগের শ্রেষ্ঠ আলেমগন গর্তে/জংগলে/পর্দার অন্তরালে কখনোই লুকিয়ে ছিলেন না! বরং তারা সরাসরি মানুষের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা করতেন এবং সরাসরি লোকালয়ে দ্বীনের দাওয়াত দিতেন!
সেইজন্যই আলেমরা মাজহুল ব্যক্তি যে কিনা প্রকৃত আহলে সুন্নত নাকি আহলে বিদআতের লোক , আলেম নাকি জাহেল, এই বিষয়গুলো ভালোভাবে যাচাই না করে তার কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান নিতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
এই ব্যপারে ইমাম শু’বাহ রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যুঃ ১৬০ হিজরী) বলেন, “ইলম তার কাছ থেকেই নাও, যে ব্যক্তি পরিচিত।”
[আল-জারহ ওয়াত-তা’দীলঃ ২/২৮]
---
কে এই তামিম আল আদনানি? কি তার আকিদা, মানহাজ? কি তার পরিচয়?কি তার পড়াশোনা?
কারা তার উস্তাদ? সে কি বাংলাদেশি নাকি আরবীয়?
তাকে সম-সাময়িক কোন আলেম চিনেন কিনা, বা তিনি আলেমদের কাছ থেকে দ্বীন শিখেছেন কিনা, তাঁদের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেন কিনা অথবা ওলামাদের, সহবতে ছিলেন কিনা, এসব বিষয়াদি না জেনেই এমন ব্যক্তি থেকে আপনি অন্ধের মত কি করে দ্বীনের জ্ঞান নিচ্ছেন? এ প্রসঙ্গে একজন সালাফ বলেছিলেন-দ্বীনের ব্যপারে “প্রকৃত আলেম” ছাড়া অপরিচিত, অজ্ঞ লোকদেরকে আলেম মনে করে তাদের কথা বিশ্বাস করবেনা। যদি করো, তাহলে যেন তুমি তোমার দ্বীনকেই ধ্বংস করলে"!
আমাদের অনুসন্ধানে "আদনানি" নামক এই প্রানীর অস্তিত্ব নিয়েই সন্দেহ রয়ে গেছে , হয়ত এই নামটি সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে দেশের চরমপন্থি গ্রুপগুলো যুবকদের ব্রেনওয়াশ করছে!, যাহোক
এই আদনানি মুলত ‘সালফে সালেহীন’ (সাহাবীদের) আক্বীদাহ (ধর্মীয় বিশ্বাস) ও মানহাজে (কর্ম পদ্ধিত বা চলার নীতিতে) বিশ্বাসী নয়। অনেক সময় সে মনভোলানো যুক্তি ও কথার দ্বারা আহলে সুন্নাহর বিরোধীতা করে এবং কৌশলে তার ভক্ত-শ্রোতাদেরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে।
®আল কায়েদা ও আদনানী ঃ--
চরমপন্থি খারিজি সংগঠন আল কায়েদার সাথে তামিম আল আদনানীর সখ্যতা বেশ পুরানো!
এ বিষয়ে "কেন আল কায়েদাতে যোগ দিলাম" শিরোনামে আদনানীর ঘণ্টাব্যাপী লেকচার রয়েছে!
সেখানে সে স্পটভাবে আল কায়েদাতে যোগদান এবং উসামা বিন লাদেন কে " শহিদ "হিসেবে উল্লেখ্য করে নিজেকে তার মতাদর্শের হিসেবে উপস্থাপন করেন!
লিংক--- http://ia802604.us.archive.org/0/items/spostorupebornonakorun_590/KenoAqKeGrohonKorlam.mp3
শুধু আল কায়েদাতে যোগ দিয়েই ক্ষান্ত হয় নি বরং কালো পতাকার হাদিস গুলোকে আল কায়েদার দিয়ে ফিট করে যুবকদের এই খারিজি সংগঠনের যোগদানের আহবান জানিয়েছেন!
কোরআনের আয়াতের অপব্যখ্যার পাশাপাশি হাদিসের
ক্ষেত্রেও এই মিস্কিনের র্ধৃস্টতা চোখে পড়ার মত!
যাহোক তার কালো পতাকা সম্বলিত হাদিস গুলোর জালিয়াতির জবাব দিয়েছেন ফজিলাতুস শাইখ ড.মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মাদানি হাফিঃ।
লিংক--- https://youtu.be/ODJRQ6HWamI
আল কায়েদার ব্যাপারে আরব ওলামাদের অবস্থানঃ
খাওয়ারিজদের সংগঠন "আল-কায়েদা" নেতা ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন আল্লামাহ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, "ওসামা বিন লাদেন হচ্ছে এমন এক ব্যক্তি যে কিনা পৃথিবীর উপর ফিতনা ছড়াচ্ছে, এবং ধংস আর অকল্যাণের পথে হাঁটছে। এবং সে নেতৃবৃন্দ ও শাসকদের সাথে বিদ্রোহ করেছে এবং তাদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।"
(আল-মুসলিমুন এবং আল-শারক আল-আওসাত পত্রিকাসমূহ থেকে নেয়া হয়েছে সময়কাল ছিল আরবি মাস জমাদাউল উলা, ১৪১৭ হিজরি, বা ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ)।
ইয়েমেনীয় দারুল হাদিস দাম্মাজের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামাহ
মুকবিল ইবন হাদি আল-ওয়াদি রাহিমাহুল্লাহ , কুয়েতি আল-রায়ু আল-আম (ইস্যু নং ১১৫০৩, ১২/১৯/১৯৯৮) পত্রিকাকে এক সাক্ষাতকারে বলেন, “এইখানে, আল্লাহ্র সামনে, আমি নিজেকে বিন লাদেন থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি, কেননা সে গোটা মুসলিম জাতির জন্য বিপজ্জনক, আর তার কার্যকলাপ জঘন্য”
বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আল্লামাহ আব্দুল্লাহ মহসিন আল আব্বাস হাফি: বলেন-- আল কায়েদা হল জমিনের বুকে একমাত্র ফিতনা সৃস্টিকারী দল! এরা যে চরমপন্থি এতে কোন সন্দেহ নেই!
লিংক-- https://youtu.be/nSsKaGMaCnc
আল্লামাহ মুকবিল বিন হাদি আল ওয়াদি রাহি: আরও বলেন ওসামা বিন লাদেন হল খাওয়ারিজদের নেতা! এই উম্মাহ তাকফিরের মত যেসব বিপর্যয়ের মুখোখুখী হয়েছে তার জন্য সে দায়ী-
লিংক-- https://youtu.be/BO7BcXTc4zw
ফজিলাতুস শাইখ রমাজান আল হাজিরি হাফিঃ বলেন-- আল নুসরা,বোকো হারাম, আল কায়েদা ইত্যাদি সংগঠন গুলো জিহাদের নামে জমিনে ফিত্নার দার উন্মুক্ত করেছে! কোন সন্দেহ নেই, এরাই হল জাহান্নামের কুকুর!
লিংক--- https://youtu.be/4dwlFMkhl2I
শাইখ সালমান আল আওদাহ, যে কিনা এক সময় আল কায়েদার সাথে জড়িত ছিল সেই আওদাও ২০০৭ সালে ওসামাকে হাজার হাজার মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে বিবৃতি দিয়েছিল! এবং নিজেকে তার থেকে মুক্ত ঘোষণা করেছিল! যেহেতু আইএস, আল কায়েদা ও সমমনা দলগুলো খারেজী এবং ফিতনা সৃষ্টিকারী। এইসব বিষয়ে আহলুল সুন্নাহর উলামারা সবাই একমত। ইন্ডিয়ার বিখ্যাত বক্তা ও দাঈ ব্রাদার ইমরান (হাফি) ৫০ জন শীর্ষস্থানীয় উলামার ফাতওয়া ও বিভিন্ন দলিল এনেছে আল কায়েদার বিরুদ্ধে। যাতে সমস্ত ওলামারা বলেছেন এরা খারিজি সংগঠন!
লিংক--https://m.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=krIVzME_Jkk
®সর্বশেষ নসিহতঃ
সাহাবীদের পর থেকে তাবেয়ীদের যুগ থেকে,
যখন থেকে মুসলমানদের মাঝে “উলামায়ে ছু” (মন্দ বা
পথভ্রষ্ট আলেম) ও আয়াম্মায়ে দ্বোয়াল্লিন (পথভ্রষ্ট
ইমাম বা নেতা) মুসলিম উম্মাহর মাঝে প্রবেশ করেছে,
তখন থেকেই আমাদের আলেমরা বার বার সতর্ক করে
গেছেনঃ ইসলাম শেখার জন্য যাকে-তাকে “উস্তাদ” বা
শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ না করার জন্য।
এইসব চরমপন্থি বক্তা কিছু ভাল কথার আড়ালে তাদের ‘জাহালত’ (অজ্ঞতা) ও ‘দ্বোয়ালালাহ’ (ভ্রষ্টতা) লুকিয়ে রাখে, যার দ্বারা আপনি, আমি বিভ্রান্ত হতে বাধ্য!
তাই নবাগত দ্বীনী ভাইগন হ্যামিলনের বাশিওয়ালা নয় বরং সালাফদের মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত আলেমদের থেকে ইল্ম হাসিল করুন।
এক্ষেত্রে বিখ্যাত তাবি'ঈ ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু সীরন রাহঃ র সেই বিখ্যাত উক্তি টি আবারো স্বরন করিয়ে দিচ্ছি! তিনি বলেছেন- "নিশ্চয়ই এ ইল্ম হলো দ্বীনের অন্তভূক্ত! কাজেই কার কাছ থেকে তোমরা দ্বীন গ্রহণ করছে তা যাচাই করে নাও। (অর্থাৎ সত্যবাদী, দ্বীনদার এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির কাছ থেকে দ্বীনের ইল্ম নেওয়া অবশ্যক)
#প্রচারে___সুন্নাহর___পথযাত্রী
No comments:
Post a Comment