আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ!
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা-র জন্য এবং অসংখ্য সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ-এর প্রতি।
প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা---
একের পর এক মিথ্যাচারে জর্জরিত তাওহীদের ভুমি সৌদিআরব! সমস্ত বাতিল পন্থিদের গাত্রদাহ যেন কিছুতেই থামছে না! স্বরনকালের সবচেয়ে বেশি তথ্যসন্ত্রাসের শিকারও হচ্ছে এই দেশটি!
আমার বিবেচনায়- সৌদি সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা গুলোর একটি হল -"তাদের হাতে আন্তর্জাতিক মানের কোন মিডিয়া না থাকা এবং রাষ্ট্রনেতাদের প্রচারবিমুখী মনোভাব"! যার ফলে বিশাল অংকের অর্থ সহযোগীতা এবং ফরেন পলিসিটা ও চাপা পড়ে যাচ্ছে শত্রুদের নানাবিধ প্রোপাগান্ডায়!
বর্তমানে মিডিয়া নামক জন্তুটা ডাইরেক্ট অথবা ইনডাইরেক্টলি প্রায় পুরোটাই ইহুদী/নাসাদের দখলে। মিডিয়ায় যা দেখানো হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ তাই সরল মনে বিশ্বাস করছে। যার ফলে পর্দার অন্তরালের খবর গুলো হামেশাই চাপা পড়ে যাচ্ছে!
এই মিডিয়া দ্বারাই কন্ট্রোল করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের মন-মগজ। যার কারনে মানুষের বিচার বু্দ্ধি দিনকে দিন লোপ পাচ্ছে! সত্যি বলতে বর্তমান সময়ে প্রায় ৯৯% মিডিয়াই হয়ে গেছে সৌদিআরবের সবচেয়ে বড় শত্রু!
পার্স টুডে, শিয়া আলো, শিয়া দিগন্ত, শিয়ান্তর, মিডেল ইস্ট মনিটর, আল জাজিরার মত হলুদ মিডিয়ার খবর গুলো যখন মুক্ত হস্তে বিলিকরণ হয় সৌদি বিরোধী প্রচারনার অংশ হিসেবে, তখন আর বলার মত কোন ভাষা অথবা সুচিন্তা করার মত বিবেকবোধ থাকেনা!
আফসোসের পাশাপাশি বিস্মিতও হই, আমাদেরই কিছু ভাইয়ের কর্মকান্ড দেখলে!এরা এমন এমন কিছু পত্রিকার রেফারেন্স এনে সৌদিকে ইসরাইলি দালাল হিসেবে প্রমান করতে চায়, যে পত্রিকা গুলো এক সময় তাদের নেতাদেরকেই ধর্ষক বানিয়েছিল!
নিজেরা কখনোই দেশীয় মিডিয়ার প্রতি নুন্যতম আস্থা রাখেনা যখন তা তাদের নিজের, নিজ দলের অথবা দলীয় নেতার বিরুদ্ধে যায়!
কিন্তু এক ই প্রোপাগান্ডা যখন আরবের বিরুদ্ধে করা হয়(বিশেষ করে সৌদিআরব) তখন এরা নিজেদের বিদ্বেষী চশমা টা খুলে একটু তা যাচাই-বাচাইয়ের প্রয়োজন ই বোধ করেনা বরং তা মুক্ত হস্তেই বিলি করে দেয় পাব্লিকের কাছে!
---
সৌদিআরব ও ইসরাইলের মধ্যে কোন সম্পর্ক রয়েছে কিনা এমন একটি প্রশ্নের জবাবে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের মিশরের সিবিসি টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে সাক্ষাতকারে বলেন-"“সৌদি আরবে সাথে ইসরায়েলের মধ্যে নুন্যতম কোন সম্পর্ক নেই,
এবং এটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতি বিরোধী"
নিউজ লিংক- http://www.arabnews.com/node/1197791
অত্যন্ত দু:খ ও পরিতাপের বিষয় হল ইয়াহুদী-নাসারাদের পাশাপাশি শীয়া এবং এদেশীয় বামপন্থী মিডিয়া'র খবরগুলো কতিপয় লোক যাচাই বাছাই ছাড়াই বিশ্বাস করার পাশাপাশি দলিল হিসেবেও পেশ করছে!
চিন্তা করুন তো-
আপনি দাবিতে একজন মুসলিম অথচ এসব ফাসেক মিডিয়ার নিউজ কি করে ওহির মত চোখ বন্ধ করে গ্রহন করছেন? আপনার কি মহান আল্লাহতালার এই কথাটি স্বরণ নেই? যেখানে আমাদের রব বলেছেন---
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ
-হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ৷ এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে৷[সূরা হুজুরাত ৬]
পর সমাচার -
গত এক বছর ধরে ই একটা বিষয় খেয়াল করলাম আর তা হল- যেকোন ভাবেই সাউদিকে ইসরাইলের দালাল হিসেবে অথবা বর্তমান সৌদি সরকার কে ইসরাইলী এজেন্ট প্রমাণের আপ্রান চেষ্টা করছে একদল লোক! অথচ প্রচারবিমুখ সৌদি সরকার তা পুরোপুরি অস্বিকার করার পাশাপাশি উল্টো মুসলিমদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম অব্যহত রেখে তার প্রমানও দিচ্ছে কিন্তু তারপরেও হেটারদের মিথ্যাচার কি থেমে আছে?
বছরের প্রথমদিকের একটি নিউজ ছিল এমন -
"সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের গোপনে ইসরাইল সফর করেছেন"!
নিউজ টা শুনলে যে কেউ ই প্রথমে টাস্কি খাবেন!
কেননা যেখানে মুসলিম সরকারগুলো প্রকাশ্য সফর করতে গেলেও শতবার চিন্তাভাবনা করবেন সেখানে সাউদির মত একটা দেশের ভবিষ্যৎ বাদশার "গোপনীয়" সফর রীতিমত আতকে উঠার মতই!
এটাকে নিয়ে মিথ্যুকরা ব্যাপক প্রচারনা চালায় কিন্তু একবারের জন্যেও চিন্তা করেনা যে "আজকালকার মিডিয়ার যুগে রাষ্ট্র নেতার সফর গুলো গোপন থাকেনা বরং তা এক সময়ে প্রকাশিত হয়ে যায়!
পরিতাপের বিষয় হল, আজ পর্যন্ত কেউ ক্রাউন প্রিন্সের সফরের একটা ছবিও দেখাতে পারেনি কিন্তু তারপরও লিংক বিলিকরণ থেমে নেই!
অনলাইনে ব্যপক প্রচারণার কারনে বিষয় টি সৌদি গভর্নমেন্টের নজরে আসে এবং তারা তাৎক্ষনিক বিবৃতি দেয় যে " যুবরাজ তো দুরের কথা কোন সৌদি সরকারী কর্মকতা ই ইসরাইল সফর করেনি! সাউদির জাতীয় পত্রিকা খোদ এসব মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করেছে---লিংক--http://saudigazette.com.sa/article/520018
এর ঠিক কয়েকমাস পরেই "আল কুদুস" কে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষনা কে কেন্দ্র করে ইসরাইলী সেনারা ব্যাপক ধর- পাকড়/হত্যাকান্ড চালায় ফিলিস্থিনিদের উপর!
আবারো শুরু হয় সৌদি বিরোধী প্রচারণা!
এই সুযোগে আমাদের তথাকথিত খলিফাগন মুখোরোচক কিছু কথা বলে মিডিয়াপাড়া মাতিয়ে ফেলে! কথাগুলো অনেকটা এরকম---
"ইসরাইল কে মাটির সাথে মিশিয়ে দিব" !!!
"প্রয়োজনে সেনা পাঠাবো"!!!
"ইসরাইল সন্ত্রাসী রাষ্ট্র" !!!
"নেতানিয়াহু একজন কিলার" ব্লা ব্লা ব্লা!!!
কিন্তু কার্যত ফিলিস্থিনিদের জন্য কিছু করা অথবা নির্যাতন বন্ধে উদ্যোগী হওয়ার ছিটেফোঁটাও দেখা যায় নি এদের মধ্যে! পরক্ষণে সেই সাউদির বাদশা ই দৌড়ঝাপ করে & কুটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে এই হামলা, নির্যাতন বন্ধ সচেষ্ট হন। যার কৃতজ্ঞতা স্বরুপ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সৌদি বাদশার ব্যাপক প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন!
লিংক---http://saudigazette.com.sa/article/524122/World/Mena/Abbas-thanks-Saudi-King-for-firm-position-on-Jerusalem
তার পর পর ই স্পট ভাষায় সাউদির ক্রাউন প্রিন্স ও মন্ত্রী ড.আওয়াদ আল আওয়াদ ঘোষণা করেন, "আল কুদুস হচ্ছে সৌদি বাদশা, সৌদি প্রিন্স ও সৌদি জনগনের অন্তর! আমাদের অবস্থান স্পট, আমরা কখনোই এটাকে ইসরাইলি রাজধানী হিসেবে মেনে নেব না বরং আমরা ফিলিস্থিনি জনগনের পক্ষেই আছি!--- লিংকঃ- http://saudigazette.com.sa/article/523874
সর্বশেষ নিউজ হচ্ছে --
গত এপ্রিলে সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দাহরানে আরব লীগের ২৯তম সম্মেলন শেষ হয়!
এই সম্মেলনকে ‘জেরুজালেম স্যামিট’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে সৌদি বাদশাহ বলেন, আমরা জেরুজালেম বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে আবারও জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এসময় জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের সিদ্বান্ত কে অবৈধ ষোষনা করা হয়"!
তারপরেই ফিলিস্থিনিদের জন্য প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান ঘোষনা করেন বাদশা সালমান হাফি:
লিংক- http://saudigazette.com.sa/article/532764/SAUDI-ARABIA/King-Salman-donates-$150m-for-Jerusalem-Islamic-endowments
চোখ বন্ধ করে একবার চিন্তা করুন তো -১৫০ মিলিয়ন!
জনাব-নিজ পকেট থেকে কখনো ১ হাজার টাকার একখানা নোট দিয়েছিলেন রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা ওই ভিক্ষুকের থালায়?
আপনার মত লোকের পকেট থেকে ৫০ টাকা ভিক্ষুকের জন্য বেরোতেই কলিজা টা ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় অথচ সেই আপনি ই কোন মুখে তাদের সমালোচনা করেন -আল্লাহর রহমতের পরেই যাদের অনুদানে আজকের এই ফিলিস্থিন এখনো টিকে রয়েছে?
শেষ কথা-
বর্তমানে হেটারদের পাশাপাশি চরমপন্থি দলগুলো সুকৌশলে পুরো উম্মাহর অন্তরে সৌদি বিদ্বেষী বীজ বপন করে দিচ্ছে!ওদের মুল টার্গট কিন্তু ইনসাফ ভিত্তিক হক্ব কথা বলা অথবা গঠনমুলক সমালোচনা করা নয় বরং এই দেশটিকে ধংস করার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তাওহীদের প্রচার/প্রসারের রাস্তাকে রুখে দেয়া!!!
একটা মোদ্দা কথা মনে রাখা জরুরি-"আপনি যখনি কোন শাসকের প্রতি অন্তরে ঘৃনা/বিদ্বেষ পুষে রাখবেন
একটা সময় তা কিন্তু তাকফিরের দিকে মোড় নিতে পারে!আবার ওই বিদ্বেষ আস্তে আস্তে সাধারণ জনগন /আলেমসমাজের প্রতিও ছড়িয়ে পড়ে! যার বাস্তবতা আমরা বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি।
একটু স্বরন করিয়ে দেই-----
মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা বা তাদের অনিষ্টের ইচ্ছা করার শাস্তিঃ
আবু হুরাইরা রাদি. বলেন, আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি এ শহর অর্থাৎ মদীনাবাসীদের সাথে অনিষ্টের ইচ্ছা করবে, আল্লাহ তা'আলা তাকে নিঃশেষ করে দিবেন, যেমন লবন পানিতে নিঃশেষ হয়ে যায়।" (মুসলিম:১৩৮৬)
সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে কেউ মদিনাবাসীর সাথে ষড়যন্ত্র বা প্রতারনা করবে, সে লবন যেভাবে পানিতে গলে যায়, সেভাবে গলে যাবে।
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ); অধ্যায়ঃ ২২/ হজ্ব (হাজ্জ) (كتاب الحج); হাদিস নম্বরঃ ১৭৫৬
সুতরাং যদি সৌদি শাসকগোষ্ঠী মদিনা বিরোধী কোন কর্মে লিপ্ত থাকেন তাহলে আল্লাহতালা অচিরেই তাদেরকে ধংস করে দিবেন আর যদি বহিরাগত কেউ এরুপ কর্মে লিপ্ত থাকেন আল্লাহতালা তাদেরকেও নিঃশেষ করে দিবেন!
লেখকঃ--আখতার বিন আমির
ছালালাহ-ওমান
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা-র জন্য এবং অসংখ্য সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ-এর প্রতি।
প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা---
একের পর এক মিথ্যাচারে জর্জরিত তাওহীদের ভুমি সৌদিআরব! সমস্ত বাতিল পন্থিদের গাত্রদাহ যেন কিছুতেই থামছে না! স্বরনকালের সবচেয়ে বেশি তথ্যসন্ত্রাসের শিকারও হচ্ছে এই দেশটি!
আমার বিবেচনায়- সৌদি সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা গুলোর একটি হল -"তাদের হাতে আন্তর্জাতিক মানের কোন মিডিয়া না থাকা এবং রাষ্ট্রনেতাদের প্রচারবিমুখী মনোভাব"! যার ফলে বিশাল অংকের অর্থ সহযোগীতা এবং ফরেন পলিসিটা ও চাপা পড়ে যাচ্ছে শত্রুদের নানাবিধ প্রোপাগান্ডায়!
বর্তমানে মিডিয়া নামক জন্তুটা ডাইরেক্ট অথবা ইনডাইরেক্টলি প্রায় পুরোটাই ইহুদী/নাসাদের দখলে। মিডিয়ায় যা দেখানো হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ তাই সরল মনে বিশ্বাস করছে। যার ফলে পর্দার অন্তরালের খবর গুলো হামেশাই চাপা পড়ে যাচ্ছে!
এই মিডিয়া দ্বারাই কন্ট্রোল করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের মন-মগজ। যার কারনে মানুষের বিচার বু্দ্ধি দিনকে দিন লোপ পাচ্ছে! সত্যি বলতে বর্তমান সময়ে প্রায় ৯৯% মিডিয়াই হয়ে গেছে সৌদিআরবের সবচেয়ে বড় শত্রু!
পার্স টুডে, শিয়া আলো, শিয়া দিগন্ত, শিয়ান্তর, মিডেল ইস্ট মনিটর, আল জাজিরার মত হলুদ মিডিয়ার খবর গুলো যখন মুক্ত হস্তে বিলিকরণ হয় সৌদি বিরোধী প্রচারনার অংশ হিসেবে, তখন আর বলার মত কোন ভাষা অথবা সুচিন্তা করার মত বিবেকবোধ থাকেনা!
আফসোসের পাশাপাশি বিস্মিতও হই, আমাদেরই কিছু ভাইয়ের কর্মকান্ড দেখলে!এরা এমন এমন কিছু পত্রিকার রেফারেন্স এনে সৌদিকে ইসরাইলি দালাল হিসেবে প্রমান করতে চায়, যে পত্রিকা গুলো এক সময় তাদের নেতাদেরকেই ধর্ষক বানিয়েছিল!
নিজেরা কখনোই দেশীয় মিডিয়ার প্রতি নুন্যতম আস্থা রাখেনা যখন তা তাদের নিজের, নিজ দলের অথবা দলীয় নেতার বিরুদ্ধে যায়!
কিন্তু এক ই প্রোপাগান্ডা যখন আরবের বিরুদ্ধে করা হয়(বিশেষ করে সৌদিআরব) তখন এরা নিজেদের বিদ্বেষী চশমা টা খুলে একটু তা যাচাই-বাচাইয়ের প্রয়োজন ই বোধ করেনা বরং তা মুক্ত হস্তেই বিলি করে দেয় পাব্লিকের কাছে!
---
সৌদিআরব ও ইসরাইলের মধ্যে কোন সম্পর্ক রয়েছে কিনা এমন একটি প্রশ্নের জবাবে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের মিশরের সিবিসি টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে সাক্ষাতকারে বলেন-"“সৌদি আরবে সাথে ইসরায়েলের মধ্যে নুন্যতম কোন সম্পর্ক নেই,
এবং এটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতি বিরোধী"
নিউজ লিংক- http://www.arabnews.com/node/1197791
অত্যন্ত দু:খ ও পরিতাপের বিষয় হল ইয়াহুদী-নাসারাদের পাশাপাশি শীয়া এবং এদেশীয় বামপন্থী মিডিয়া'র খবরগুলো কতিপয় লোক যাচাই বাছাই ছাড়াই বিশ্বাস করার পাশাপাশি দলিল হিসেবেও পেশ করছে!
চিন্তা করুন তো-
আপনি দাবিতে একজন মুসলিম অথচ এসব ফাসেক মিডিয়ার নিউজ কি করে ওহির মত চোখ বন্ধ করে গ্রহন করছেন? আপনার কি মহান আল্লাহতালার এই কথাটি স্বরণ নেই? যেখানে আমাদের রব বলেছেন---
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ
-হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ৷ এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে৷[সূরা হুজুরাত ৬]
পর সমাচার -
গত এক বছর ধরে ই একটা বিষয় খেয়াল করলাম আর তা হল- যেকোন ভাবেই সাউদিকে ইসরাইলের দালাল হিসেবে অথবা বর্তমান সৌদি সরকার কে ইসরাইলী এজেন্ট প্রমাণের আপ্রান চেষ্টা করছে একদল লোক! অথচ প্রচারবিমুখ সৌদি সরকার তা পুরোপুরি অস্বিকার করার পাশাপাশি উল্টো মুসলিমদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম অব্যহত রেখে তার প্রমানও দিচ্ছে কিন্তু তারপরেও হেটারদের মিথ্যাচার কি থেমে আছে?
বছরের প্রথমদিকের একটি নিউজ ছিল এমন -
"সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের গোপনে ইসরাইল সফর করেছেন"!
নিউজ টা শুনলে যে কেউ ই প্রথমে টাস্কি খাবেন!
কেননা যেখানে মুসলিম সরকারগুলো প্রকাশ্য সফর করতে গেলেও শতবার চিন্তাভাবনা করবেন সেখানে সাউদির মত একটা দেশের ভবিষ্যৎ বাদশার "গোপনীয়" সফর রীতিমত আতকে উঠার মতই!
এটাকে নিয়ে মিথ্যুকরা ব্যাপক প্রচারনা চালায় কিন্তু একবারের জন্যেও চিন্তা করেনা যে "আজকালকার মিডিয়ার যুগে রাষ্ট্র নেতার সফর গুলো গোপন থাকেনা বরং তা এক সময়ে প্রকাশিত হয়ে যায়!
পরিতাপের বিষয় হল, আজ পর্যন্ত কেউ ক্রাউন প্রিন্সের সফরের একটা ছবিও দেখাতে পারেনি কিন্তু তারপরও লিংক বিলিকরণ থেমে নেই!
অনলাইনে ব্যপক প্রচারণার কারনে বিষয় টি সৌদি গভর্নমেন্টের নজরে আসে এবং তারা তাৎক্ষনিক বিবৃতি দেয় যে " যুবরাজ তো দুরের কথা কোন সৌদি সরকারী কর্মকতা ই ইসরাইল সফর করেনি! সাউদির জাতীয় পত্রিকা খোদ এসব মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করেছে---লিংক--http://saudigazette.com.sa/article/520018
এর ঠিক কয়েকমাস পরেই "আল কুদুস" কে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষনা কে কেন্দ্র করে ইসরাইলী সেনারা ব্যাপক ধর- পাকড়/হত্যাকান্ড চালায় ফিলিস্থিনিদের উপর!
আবারো শুরু হয় সৌদি বিরোধী প্রচারণা!
এই সুযোগে আমাদের তথাকথিত খলিফাগন মুখোরোচক কিছু কথা বলে মিডিয়াপাড়া মাতিয়ে ফেলে! কথাগুলো অনেকটা এরকম---
"ইসরাইল কে মাটির সাথে মিশিয়ে দিব" !!!
"প্রয়োজনে সেনা পাঠাবো"!!!
"ইসরাইল সন্ত্রাসী রাষ্ট্র" !!!
"নেতানিয়াহু একজন কিলার" ব্লা ব্লা ব্লা!!!
কিন্তু কার্যত ফিলিস্থিনিদের জন্য কিছু করা অথবা নির্যাতন বন্ধে উদ্যোগী হওয়ার ছিটেফোঁটাও দেখা যায় নি এদের মধ্যে! পরক্ষণে সেই সাউদির বাদশা ই দৌড়ঝাপ করে & কুটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে এই হামলা, নির্যাতন বন্ধ সচেষ্ট হন। যার কৃতজ্ঞতা স্বরুপ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সৌদি বাদশার ব্যাপক প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন!
লিংক---http://saudigazette.com.sa/article/524122/World/Mena/Abbas-thanks-Saudi-King-for-firm-position-on-Jerusalem
তার পর পর ই স্পট ভাষায় সাউদির ক্রাউন প্রিন্স ও মন্ত্রী ড.আওয়াদ আল আওয়াদ ঘোষণা করেন, "আল কুদুস হচ্ছে সৌদি বাদশা, সৌদি প্রিন্স ও সৌদি জনগনের অন্তর! আমাদের অবস্থান স্পট, আমরা কখনোই এটাকে ইসরাইলি রাজধানী হিসেবে মেনে নেব না বরং আমরা ফিলিস্থিনি জনগনের পক্ষেই আছি!--- লিংকঃ- http://saudigazette.com.sa/article/523874
সর্বশেষ নিউজ হচ্ছে --
গত এপ্রিলে সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দাহরানে আরব লীগের ২৯তম সম্মেলন শেষ হয়!
এই সম্মেলনকে ‘জেরুজালেম স্যামিট’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে সৌদি বাদশাহ বলেন, আমরা জেরুজালেম বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে আবারও জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এসময় জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের সিদ্বান্ত কে অবৈধ ষোষনা করা হয়"!
তারপরেই ফিলিস্থিনিদের জন্য প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান ঘোষনা করেন বাদশা সালমান হাফি:
লিংক- http://saudigazette.com.sa/article/532764/SAUDI-ARABIA/King-Salman-donates-$150m-for-Jerusalem-Islamic-endowments
চোখ বন্ধ করে একবার চিন্তা করুন তো -১৫০ মিলিয়ন!
জনাব-নিজ পকেট থেকে কখনো ১ হাজার টাকার একখানা নোট দিয়েছিলেন রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা ওই ভিক্ষুকের থালায়?
আপনার মত লোকের পকেট থেকে ৫০ টাকা ভিক্ষুকের জন্য বেরোতেই কলিজা টা ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় অথচ সেই আপনি ই কোন মুখে তাদের সমালোচনা করেন -আল্লাহর রহমতের পরেই যাদের অনুদানে আজকের এই ফিলিস্থিন এখনো টিকে রয়েছে?
শেষ কথা-
বর্তমানে হেটারদের পাশাপাশি চরমপন্থি দলগুলো সুকৌশলে পুরো উম্মাহর অন্তরে সৌদি বিদ্বেষী বীজ বপন করে দিচ্ছে!ওদের মুল টার্গট কিন্তু ইনসাফ ভিত্তিক হক্ব কথা বলা অথবা গঠনমুলক সমালোচনা করা নয় বরং এই দেশটিকে ধংস করার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তাওহীদের প্রচার/প্রসারের রাস্তাকে রুখে দেয়া!!!
একটা মোদ্দা কথা মনে রাখা জরুরি-"আপনি যখনি কোন শাসকের প্রতি অন্তরে ঘৃনা/বিদ্বেষ পুষে রাখবেন
একটা সময় তা কিন্তু তাকফিরের দিকে মোড় নিতে পারে!আবার ওই বিদ্বেষ আস্তে আস্তে সাধারণ জনগন /আলেমসমাজের প্রতিও ছড়িয়ে পড়ে! যার বাস্তবতা আমরা বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি।
একটু স্বরন করিয়ে দেই-----
মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা বা তাদের অনিষ্টের ইচ্ছা করার শাস্তিঃ
আবু হুরাইরা রাদি. বলেন, আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি এ শহর অর্থাৎ মদীনাবাসীদের সাথে অনিষ্টের ইচ্ছা করবে, আল্লাহ তা'আলা তাকে নিঃশেষ করে দিবেন, যেমন লবন পানিতে নিঃশেষ হয়ে যায়।" (মুসলিম:১৩৮৬)
সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে কেউ মদিনাবাসীর সাথে ষড়যন্ত্র বা প্রতারনা করবে, সে লবন যেভাবে পানিতে গলে যায়, সেভাবে গলে যাবে।
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ); অধ্যায়ঃ ২২/ হজ্ব (হাজ্জ) (كتاب الحج); হাদিস নম্বরঃ ১৭৫৬
সুতরাং যদি সৌদি শাসকগোষ্ঠী মদিনা বিরোধী কোন কর্মে লিপ্ত থাকেন তাহলে আল্লাহতালা অচিরেই তাদেরকে ধংস করে দিবেন আর যদি বহিরাগত কেউ এরুপ কর্মে লিপ্ত থাকেন আল্লাহতালা তাদেরকেও নিঃশেষ করে দিবেন!
লেখকঃ--আখতার বিন আমির
ছালালাহ-ওমান
No comments:
Post a Comment