Wednesday, July 4, 2018

জেরুজালেম নিয়ে কিছু তৃক্ত অনুভূতি..!

গত পরশু রাতের খাবার খেতে গিয়ে হোটেলে জানতে পারলাম আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাকি জেরুজালেম কে ইসরাইলের রাজধানী বানানোর ঘোষনা দিয়েছে!!!!যেহেতু বেশ কিছুদিন অনলাইন জগত থেকে দূরে ছিলাম তাই খবর টা হঠাৎ শুনেই মর্মাহত হয়েছি! এমনিতেই অন্তরের একটা বৃহত অংশজুড়ে ফিলিস্তিনিদের কস্টের ক্ষতের দাগ বয়ে বেড়াচ্ছি ! তার উপর এধরনের নিউজ শুনে শুধুমাত্র ওই ক্ষত-বিক্ষত অন্তর টা আরেকটু রক্তাক্ত ই হল কেবল! আসলে আমরা জেরুজালেম বহু বছর আগেই হারিয়েছি, এখন শুধুমাত্র তার দাফনকাজ সম্পন্ন করছে কাফির সম্প্রদায়গুলো!আর মুসলিম উম্মাহ তা "হা" করে তাকিয়ে দেখছে! আমরা মুসলিমরা আজ এই দুনিয়াতে শরনার্থী হয়ে বেচে আছি! আর শরনার্থীই বা হব না কেন! চিন্তা করুন তো অধিকাংশ যুবক-যুবতী ই কোন না কোনভাবে নেশাগ্রস্থ!নাচ-গান/খেল-তামাশা /ক্রিকেট -ফুটবল/জেনা ব্যাবিচার/মদ জুয়া/বেনামাজি /সুদ ঘুস/শিরিক-বেদায়াত/কুফুরি etc এমন কোন পাপ রয়েছে যা আমাদের দ্বারা হচ্ছেনা???
এ প্রসঙ্গে এযুগের বিখ্যাত আলেমেদ্বীন ইমাম মুহাম্মদ ইবনে উসায়মিন রাহিমাহুল্লাহ বলেছিলেন, “ওহুদ যুদ্ধে মাত্র অল্প কয়জন সাহাবী রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর ‘একটি মাত্র আদেশ’ অমান্য করার কারণে গোটা মুসলিম বাহিনীর নিশ্চিত জয় হাতছাড়া হয়ে তাদের উপর বড় বিপর্যয় নেমে এসেছিলো । সেখানে বর্তমানে আমরা কি করে আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার আশা করতে পারি, যেখানে আমাদের মাঝে বেশিরভাগ লোকই হচ্ছে পাপী, আর আমাদের পাপের সংখ্যা হচ্ছে অগণিত?”
আমরা যখন ই আল্লাহতালার প্রদত্ত দ্বীন থেকে সরে গিয়ে তার নাফরমানি তে লিপ্ত হয়েছি, আল্লাহতালা তখন ই আমাদেরকে লাঞ্ছিত /অপমানিত করেছেন! তাইতো কাফিরদের "গোলামির মালা" নিজ গলায় পড়তে আমরা বাধ্য হয়েছি! একারণেই মুসলিমদের উপর বৃষ্টির মতো একের পর এক ফিতনাহ বর্ষিত হচ্ছে দেখে এখন আর আগের মত এত্ত আশ্চর্য হইনা। সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছি আজকে একটি আরবি চ্যানেল দেখে!আউজুবিল্লাহ
আধা হিজাবী/টাইট ফিট জিন্স /টি শার্ট পরিহিতা, সাথে ক্লিন সেভ /টাকনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে রাখা ফিলিস্তিনি প্রতিবাদী নারী -পুরুষদের দেখে বড় ই অবাক হলাম! এরাই নাকি ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে রাজপথ কাপাচ্ছে!জেরুজালেম উদ্বারের স্লোগানধারীদের এক কথায় মৃত্যুপুরী তে বসবাস কারীদের দ্বীন সম্পকে এতটা গাফেল দেখে যারপরনাই আশ্চর্য হলাম!
চিন্তা করুন তো- আল্লাহর রাসুল সা: আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদি: কে বলেন, "হে বৎস" তুমি আল্লাহর দ্বীনের হেফাজত করিও, তাহলে আল্লাহ ও তোমার হেফাজত করবেন। এখন প্রশ্ন জাগে- আমরা কি আল্লাহর দ্বিনের যথাযথ হেফাজত করছি?তাহলে- কি করে, কোন মুখ নিয়ে আমরা আল্লাহর কাছে মদদ চাইবো? বলুন তো এজাতি কেন লাঞ্ছিত /অপমানিত হবেনা?
উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছিলেন, “আমরা তো মর্যাদাহীন লোক ছিলাম, আল্লাহ আমাদেরকে ইসলাম এর নিয়ামত দিয়ে সম্মানিত করেছেন। সুতরাং, আল্লাহ আমাদেরকে যা দ্বারা সম্মানিত করেছেন, আমরা যদি সেই ইসলাম থেকে দূরে সরে গিয়ে অন্য কোথাও সম্মান খুঁজি, তাহলে আল্লাহ পুনরায় আমাদেরকে অপমানিত করবেন।”
এ থেকে মুক্তির পথ সম্পর্কে ইমাম মালেক রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যুঃ ১৭৯ হিজরী) বলেছিলেন, “এই উম্মতের শেষ লোকদেরকে কেবলমাত্র ঐ জিনিসই সংশোধন করতে পারে, যা তাদের পূর্ববর্তীদেরকে (অর্থাৎ সাহাবাদেরকে) সংশোধন করেছিলো।”
সুতরাং একথা আমাদের সকলেরই জেনে রাখা উচিত এই ফিতনাহ থেকে মুক্তির কোন পথ নেই, একমাত্র আল্লাহর কিতাব (ক্বুরানুল কারীম) ও রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহর দিকে ফিরে আসা ছাড়া!আপনি মানেন আর নাই বা মানেন!
কলাম--আখতার বিন আমির

No comments:

Post a Comment

আহ্লুস সুন্নাহ

▌বিবাহ : কিছু পরামর্শ - [ করনীয় ও বর্জনীয় ]

❒ প্রারাম্ভিকা, বর্তমানে যুবক যুবতীদের অবস্থা হল, তারা পাপাচার করেও পরিতৃপ্ত হচ্ছে না বরং পাপাচারের নিত্য-নতুন পদ্ধতি খুঁজে বেড়াচ্ছে।...