Thursday, June 28, 2018

কথিত নাস্থিক জাফর ঈকবালের উপর চোরাগুপ্তা হামলা নিয়ে কিছু কথা...!

অনলাইন জগত টা নিত্য-নতুন হট টপিকে ভরপুর! এ সপ্তাহের আলোচিত তেমন ই একটি টপিক হল- "ড.জাফর ইকবাল নামক এক ব্যক্তির উপর চোরাগুপ্তা  হামলা"!

এ হামলার সাথে আমার/আপনার কোন সম্পৃক্ততা না থাকলেও ফিউচারে  অশনিসংকেত হিসেবেই দেখছি!

হামলা টা কতটুকু যৌক্তির তা বড় বিষয় নয় বরং এতে আমাদের কি ফয়দা রয়েছে সেটাই মুখ্য বিষয়!

অনেকেই  হামলার শিকার এই লোকটাকে নাস্থিক মনে করেন!

প্রথমত,আমার যতটুকু স্টাডি রয়েছে তাকে নিয়ে, তাতে আমি মনে করি লোকটা প্রকৃত নাস্থিক নন(যদিও তার বহু লিখাতেই আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বিকারের বিষয়টি রয়েছে) বরং চরম ইসলাম বিদ্বেষী!  সমস্যা হল আমরা  অনেকেই ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে নাস্থিক মনে করলেও এরা কিন্তু অন্তরে পিওর নাস্থিকতা লালন করেন না!  একজন নাস্থিক কি কখনো  কোন ধর্মের প্রতি  সহানুভূতিশীল হতে পারেন? একটু খেয়াল করলে দেখবেন,এরা যতটা আক্রমণাত্মক ইসলামের বিরুদ্ধে ঠিক ততটাই নিরব অন্য ধর্মের ব্যাপারে! নাস্থিকতার একটা দর্শন হল তারা সকল ধর্মের প্রতি ই সমান বিদ্বেষী থাকবেন, যেহেতু তাদের দৃস্টিতে ধর্মটা মানব সৃস্ট! কিন্তু এইসব নামধারী নাস্থিকগন কি অধো সেই কল্পিত দর্শন ফলো করেন? 

শুধু তাই নয় নাস্থিক জননী তাসলিমা নাসরিন ও গত বছর বলেছিল যে, " মাঝেমাঝে মন চায় সব কিছু ছেড়ে দিয়ে -নামাজ, রোজা ধরি "! এতেই বুঝা যায় এরা অন্তরে পিওর নাস্থিকতা লালন করেন না বরং বাহিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মুসলিম সমাজে ইসলাম  বিদ্বেষী একটি প্রজন্ম(নামে মাত্র নাস্থিক) তৈরির চেষ্টা করছে মাত্র!

যদিও এতে তেমন সফলতার মুখ দেখেনি তারা,কারন নাস্থিকতা মানুষের ন্যাচার বিরোধী!


এবার আসি মুল বিষয়ে....

প্রথমত্ব,

সালাফি আকিদা পোষনকারী কিছু যুবকের আচরন আমাকে রীতিমত বিস্মিত করেছে! অনেকেই কথিত নাস্থিক ড.জাফর ইকবাল কে "জাফর ষাড়" বলে ব্যাংজ্ঞ করতে দেখলাম! যা এক্কেবারেই গর্হিত & ফাসেকি কাজ!

কোন ব্যক্তির নাম নিয়ে ব্যাংজ্ঞ করা গুনাহের কাজ & তিনি যেই হোন না কেন! সালাফি আকিদা পোষন করেও  আপনার আখলাকের এমন বেহাল দশা কোনভাবেই কাম্য নয়!


দ্বিতীয়ত্ব,

ওই কথিত নাস্থিকের উপর যে ব্যক্তি হামলা করেছে সে একজন চরমপন্থি এতে কোন সন্দেহ নাই!ফিউচারের চিন্তা না করেই আবেগের বশে হুট করে এমন কাজ গুলোতে লাভের চাইতে ক্ষতি ই বেশি!

ওইসকল অতি উৎসাহী যুবকদের কাছে জানতে চাই এমন চোরাগুপ্তা হামলায়  আমাদের কি লাভ হল? কারা এর বেনিফিট নিবে? এতে আম জনতা কি কি সুফল ভোগ করবে?স্থান, কাল, পাত্র,লাভ-ক্ষতি বিবেচনা না করে এমন হামলার ফলে কারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, নাস্থিকরা নাকি আস্থিকরা?

আছে এর কোন উত্তর???

আমরা আগেও দেখেছি, আব্দুর রাহমান/বাংলা ভাইও এদেশে ভয়াবহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল কিন্তু এতে ফিতনা ছাড়া বৃহৎ কোন কল্যান সাধিত হয়েছে কি?

এখন সরকার একজনের অপরাধের কারনে আমভাবে দাড়িওয়ালা /টুপিওয়ালাদের প্রতি আবারো  ক্ষিপ্ত হয়ে উঠবে!কড়া মার্কিং এ রাখা হবে নিরিহ মুসলিমদেরকে! মিডিয়াপাড়া আই.ওয়াশ করবে উঠতি বয়সীদেরকে!

তথাকথিত প্রগতিশীলরা মুসলিমদের উপর "জংগি" তকমা লাগিয়ে  বাহিরের গুরুদের সামনে উপস্থাপন  করবে জোরেশোরে!

সর্বপরি সাধারণ দ্বীনদার মুসলিম ভাই বোনেরা ই ভিবিন্নভাবে হেনস্থার শিকার হবে! 


তৃতীয়ত্ব,

বিদাতিরা হামলাকারী যুবককে "সালাফি" মতাদর্শের প্রমান করতে উঠে পড়ে লেগেছে!অথচ একজন চরমপন্থি কখনোই সালাফি হতে পারেনা!  হেটারদের টার্গেট ই হল দেশে সালাফি দাওয়াহ'র বিপ্লব কে ঠেকানা তাই আদা-জ্বল খেয়ে মাঠে নেমেছে!

সেই সাথে দুই একটা আনকোরা অনলাইন পেপারও কোন রকম তদন্ত ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে নিউজ চেপেছে যা মিথ্যাচার বৈ কিছুই নয়!  এর আগে ড.খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহি: কে নিয়েও এমন প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল এরা!তাছাড়া বিশ্বস্ত সুত্রে জানতে পারলাম যে, ছেলেটা নিজেই সালাফিদেরকে তাগুতের দালাল/সরকারের দোসর etc ট্যাগ লাগিয়ে  বেড়াতো অথচ এখন হিংসার বশবর্তী হয়ে তাকে "সালাফি" বলে চালিয়ে দিতে চাচ্ছে একটি মহল!আল্লাহতালা তাদেরকে হেদায়াত দিন।


পরিশেষে, দোয়া করি আল্লাহতালা সালাফি মানহাজের ভাই বোনদেরকে দুশমনদের সকল দুশমনি থেকে হেফাজত করুন---আমিন।


নোট:-

আরেকটা বিষয় ক্লিয়ার করার প্রয়োজনবোধ করছি---নাস্থিক/আল্লাহদ্রোহীদের অথবা আল্লাহ ও তার রাসুল সঃ কে গালি দেওয়ার ব্যক্তিকে কেউ যদি হত্যা করে ফেলে তবে তার উপর হুদ নাই। এটা হাদীসে বর্ণিত একটি ঘটনা কে উদ্ধৃতি দিয়েই আলেমগণ  বলে থাকেন।

তবে এটা শুধুমাত্র রাষ্ট্র কতৃর্ক পূর্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকলে কিংবা অধিনস্ত্য ব্যক্তি বা দাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে! অধিনস্ত্য না হলে সেক্ষেত্রে অধিকাংশ আলেমগন  বলেছেন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবেনা!

যদি কেউ তুলে নেয় তাহলে তার উপর রাষ্ট্রীয় আইন ভংগের জন্য শাস্তি কায়েম হবে!হত্যাকারীর উদ্দেশ্য যদি ফাউদা(বিশৃংখলা) দূর করা হয় তাতেও বরং  সমাজে বিশৃঙ্খলা বাড়বে,বাহীরের কুফুরি শক্তিগুলো সুযোগ খুঁজবে এবং সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা ব্যহত হবে তাই বৃহত স্বার্থের কথা চিন্তা করে আইন কে নিজ হাতে তুলে নেওয়া যাবেনা!যেহেতু 

নাস্থিকদের প্রধান অস্র হল কলমবাজি করা তাই আমাদেরও উচিত কলম দিয়েই তার জবাব দেওয়া & রাষ্ট্র প্রধানের কাছে এদের দমনের জন্য দাবি জানানো! যদি তারা দ্বায়ীত্ব অবহেলা করেন সেক্ষেত্রে আল্লাহতালা এর ফলাফল হাতেনাতে দিয়ে দিবেন & আপনি/আমি দ্বায় মুক্ত হয়ে যাবো।

একটা মোদ্দা কথা মনে রাখবেন, কোন ব্যক্তি, দল,মতবাদ কে আপনি অস্র দিয়ে দমাতে পারবেন না বরং আর্দশ দিয়েই দমন করা সম্বব।


কলাম-আখতার বিন আমির

ছালালাহ-ওমান

No comments:

Post a Comment

আহ্লুস সুন্নাহ

▌বিবাহ : কিছু পরামর্শ - [ করনীয় ও বর্জনীয় ]

❒ প্রারাম্ভিকা, বর্তমানে যুবক যুবতীদের অবস্থা হল, তারা পাপাচার করেও পরিতৃপ্ত হচ্ছে না বরং পাপাচারের নিত্য-নতুন পদ্ধতি খুঁজে বেড়াচ্ছে।...