Saturday, June 30, 2018

কৌটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আমার ভাবনা

সেই -২০০৮ সাল!
প্রথম পা রাখলাম কলেজ লাইফে!
নতুন পরিবেশ, নতুন কিছু মানুষ আর চারদিকে নতুনত্বের ছোয়ায় যেন নিজেকে নতুনভাবে আবিস্কার করলাম! যেই ছেলেটার পুরো স্কুল লাইফ কেটেছে মাত্র একজন বন্ধুর হাত ধরে, সেই ছেলেটার ফ্রেন্ড সার্কেলে প্রায় ডজনখানেক সহপাঠীর আনাগোনা!

এইতো সেইদিনের কথা, বহিরাগত কিছু বখাটে ছেলের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে "দেখে নেওয়ার" হুমকি দিয়ে যখন চলে যায়, পাশ থেকে এক সহপাঠী পিঠ চাপড়িয়ে বলেছিল " আরে শালা ভয় পেলি নাকি? আমরা তো আছি"!
পথরুদ্ধ করে দাড়িয়ে থাকা ক্যাডারদের সামনে ওই ছেলেটাই ছিনা টান করে দাড়িয়েছিল যার সাথে কিছুক্ষণ আগেও কলেজ ক্যান্টিনে মনোমালিন্য হয়েছিল!
এর ই নাম ছাত্র ইউনিটি!  যাদের না কোন দল করতে হয়, আর না কোন লিডারের অধিনস্থে থেকে একতা করতে হয়!বরং ছাত্র হিসেবে একটা ড্রেস গায়ে থাকলেই এনাফ!

পর সমাচার
দুনিয়ার ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলন গুলো বৃথা যাওয়ার নজির খুব কম ই আছে! তবে সফলতার জন্য অনেক সময় ও রক্ত ঝরাতে হয়েছে! যেই স্বাধীনতার সুফল নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল সারাক্ষণ মিডিয়াপাড়ায় বুলি আওড়ান, সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের সুচনাই হয়েছিল ছাত্রদের রক্তে ভেজা জামার মাধ্যমে!
কয়েকদিন আগে বহুলাকাঙ্ক্ষিত একটি যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবিতে পথে নেমেছিলো এদেশের লক্ষ লক্ষ মেধাবী তরুণতরুণী যারা দেশের ভবিষ্যৎ। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে সরকারের কৌটা বৈষম্য প্রতিবাদে তাদের দাবি ছিল ‘মেধাবীদের মুক্তি চাই, কোটাপ্রথার সংস্কার চাই’।

রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে মূলত মেধাবীরা এটাই সকলের দাবি থাকা উচিত! কিন্তু সংস্কার দাবি টা সরকার এত সহজে মেনে নিয়ে পুরো কৌটা পদ্বতিই বাতিল করে দিবেন তা হয়ত কেউ কল্পনাই করেন নি! অনেকটা এরকম----
"বউয়ের আচরণ শুধরাতে ছেলের কাছে নালিশ করলাম, এখন দেখি পোলাডা বউ কে তালাক ই দিয়ে ফেলেছে"!
চাইলাম কি, আর পাইলাম কি!
অনেকটা মেঘ না চাইতেই বৃস্টি!

তিনি এত সহজে মেনে নেওয়ার মত নেত্রী নন!
নিশ্চয় ই ঘাবলা আছে!
জি, অবশেষে আমার ধারণা টা ই সঠিক  মনে হচ্ছে গত কালের মন্তব্য টি শোনার পর!
যাহোক, তিনি যে মাঝেমাঝে ৩৬০ ডিগ্রী এংগেলে পল্টি মারেন তা কে না জানে! অতীতেও তিনি সফলতার সহিত  এমন পল্টি বহুবার মেরেছেন!  কোটি মানুষের অতি ন্যায্য এ দাবিটি বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় নিয়োগনীতি/চাকুরি বাণিজ্য /পোশ্য নীতি/বিশাল আর্থিক লেনদেনের হাতছানি!

এমন একটা অরাজনৈতিক  নায্য দাবিকে পুঁজি করে রাজনীতিবিদরা তাদের সেই পুরানো  "নোংরা" খেলায় মেতে উঠেছে! যখন ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসলো তখন আমাদের মাতাল আন্টি এক বাক্যে বলে দিল  এরা "নব্য রাজাকার"! 
পক্ষান্তরে, লন্ডন থেকে জৈনক নেতার টেলিফোন উস্কানিতে সরকার ধরে ই নিয়েছে ছাত্ররা বিরোধী দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে! আবার কাল আরেক নেতা বলেই দিল "সরকারের কৌটা বাতিল ই প্রমান করে আমাদের বিজয় হয়েছে"! এই লোক গুলো কতটা নোংরা মানসিকতার হলে, এসব আবল তাবল কথা বলে, সাধারণ ছাত্রদের এমন দাবি কেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে? ডাস্টবিন থেকে উঠে আসা- সমাজের তিন নাম্বার শ্রেণীর এসব রাজনীতিবিদরা মায়ের লাশ নিয়েও রাজনীতি করতে সামান্যতম লজ্জাবোধ করেনা!
শেষ পর্যন্ত হয়ত রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে পড়ে এমন একটি যোক্তিক দাবিও ঝুলে থাকবে বছর কে বছর!

চেতনাধারী /প্রগ্রতিশীলদের কথা আর কি কমু..
অবৈধদের লালিতপালিত সন্ত্রাসী লীগ নামের দানবেরা গভীর রাতে  গেট বন্ধ করে পৈশাচিক তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত করতে লাগলো আমাদের ছাত্রছাত্রীদের কিন্তু তখনো এরা নিরব!

কোটায় নিয়োগ পাওয়া  এক পুলিশ যখন  হুঙ্কার ছাড়লো, ‘একেবারে খায়া ফালামু" তখনো এরা নিরব!

যখন এক ছাত্রীর রগ কেটে দেয় মানুষের মুখোশধারী আরেক ললনালীগ নেত্রী, তখনো এরা নিরব!

যখন একজন সাংসদ ছাত্রছাত্রীদেরকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়/ ‘দেখে নেবে’ বলে হুমকি দেয় তখনো এরা নিরব ই থাকে!

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের  ভিসির বাসভবনের হামলা কে কেন্দ্র করে এরাই আবার মিডিয়াপাড়া সরব করে ফেলে(যদিও আমার বিশ্বাস এই হামলার সাথেও ওই সন্ত্রাসী লীগ ই জড়িত )
যেই হায়েনাদের বর্বরতার বিরুদ্ধে টু শব্দটা পর্যন্ত করেনি   তথাকথিত সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও চেতনাভক্ষকরা, তারাই আবার আমাদের আইওয়াশ করে এই ইস্যু কে পুঁজি করে! নিলজ্জদের চেতনা ঘণ্টায় ঘণ্টায় পাল্টায়!

তবে -আন্দোলনকারীদের ব্যানারে  রাষ্ট্র নেত্রী ও তার আব্বার ছবি & "জয় বাংলা" স্লোগান দেখে যতটা না বিনুদন পেয়েছি  তার চাইতেও বেশি বিনুদন পেয়েছি কৌটা পদ্বতি বাতিলের ঘোষনার পর পর ই সরকারি দলের মিছিল দেখে! কি যে- হ জ ব র ল অবস্থা!

দুঃখও লাগে! 😰
আবার হাসিও পায়!😃

কলাম-আখতার বিন আমির
ছালালাহ-ওমান

No comments:

Post a Comment

আহ্লুস সুন্নাহ

▌বিবাহ : কিছু পরামর্শ - [ করনীয় ও বর্জনীয় ]

❒ প্রারাম্ভিকা, বর্তমানে যুবক যুবতীদের অবস্থা হল, তারা পাপাচার করেও পরিতৃপ্ত হচ্ছে না বরং পাপাচারের নিত্য-নতুন পদ্ধতি খুঁজে বেড়াচ্ছে।...