খারেজীদের সম্পর্কে যেই কথাগুলো সবার জানা থাকা দরকার...
সরকার যদি ক্বুরান ও সুন্নাহ দিয়ে দেশ পরিচালনা না করে, তাহলে তার অনুগত্য করারর হুকুম কি?
১. শিরক। তাগুতের অনুসরণ করার কারণে সেটা শিরক হবে।
২. হারাম
৩. জায়েজ
৪. কখনো আনুগত্য করা ফরয হবে, কখনো হারাম হবে কখনোবা সেটা শিরকও হতে পারে।
উত্তরঃ ৪. কখনো আনুগত্য করা ফরয হবে, কখনো হারাম হবে কখনোবা সেটা শিরকও হতে পারে।
ব্যখ্যাঃ মুসলমান হিসেবে কোন সরকার বা বিচারকের জন্য ফরয হচ্ছে আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ/বিচার পরিচালনা করা। তবে কেউ কখনো আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার না করলেই সে কাফের হয়ে যায়না, বরং তার আকীদা ও আমল অনুযায়ী সে ফাসেক/বড় গুনাহগার, জালেম হতে পারে আবার কখনো ইসলাম থেকে বের হয়ে কাফের-মুর্তাদ হতে পারে। এনিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য এই পোস্ট দেখুন –
কোন রাজা যদি ক্বুরান ও সুন্নাহ দিয়ে দেশ পরিচালনা না করে তাহলে সে ফাসেক জালেম কিন্তু সে যদি মুসলমান হয়ে থাকে, তাকে মুর্তাদ ঘোষণা করার মতো হুজ্জাহ বা স্পষ্ট প্রমান নেই। অবস্থা যদি এমন হয়, তাহলে এমন রাজা সে বড় জালেম হলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম, এ ব্যপারে ইজমা বা সমস্ত আলেমদের ঐক্যমত্য আছে। এটা মুসলমানদের আকীদা, কারণ মুসলমান শাসক জালেম হলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম, কারণ বিদ্রোহ করলে সমাজে ফাসাদ ও রক্তপাত আরো বেড়ে যাবে। একমাত্র খারেজীরাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের এই আকীদাহকে অস্বীকার করে।
শাইখুল ইসলাম, ইমাম আল বার্বাহারী (রহ:) বলেন, “যে ব্যক্তি মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, সে খারেজিদের মধ্যে একজন।”
শারহুস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা ১৪।
ইমাম আবু জা’ফর আহমাদ আত-ত্বাহাওয়ী (রহঃ), তার বিখ্যাত ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদার’ কিতাবে উল্লেখ করেছেন, “আমীর ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না, যদিও তারা অত্যাচার করে। আমরা তাদের অভিশাপ দিব না এবং আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নিব না। তাদের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যের সাপেক্ষে ফরয, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর অবাধ্যচরণের আদেশ দেয়। আমরা তাদের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য দো‘আ করব।”
আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া।
অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, এটা কি করে হতে পারে যে বাদশাহ ক্বুরান ও সুন্নাহ দিয়ে দেশ শাসন করেনা তবুও তার আনুগত্য করতে হবে??
এর জবাব হচ্ছে, এখানে আনুগত্য বলতে সেটা ভালো কিংবা জায়েজ কাজের ক্ষেত্রেই বোঝায়। হারাম কোন কাজে আদেশ দিলে সেটা বাবা-মা, বাদশাহ যেই দেক না কেনো, সেই আদেশ মানা যাবেনা। কিন্তু জায়েজ কাজে তাদের অনুগত থাকতে হবে, এটাই রাসুল সাঃ এর আদেশ, শাসকদের ব্যপারে ইসলামী দৃষ্টিভংগি। যেই হাদীস থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এই আকীদাহ প্রতিষ্ঠিত হয়ঃ
“হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ) বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এক সময় আমরা অকল্যাণ ও মন্দের মধ্যে (কুফরীর মধ্যে) ডুবে ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ আমাদেরকে কল্যাণের (ঈমানের) মধ্যে নিয়ে এসেছেন। এখন আমরা সেই কল্যাণের মধ্যে বহাল আছি। তবে এই কল্যাণের পরে কি আবার অকল্যাণের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আবার বললাম, সেই অকল্যানের যুগের পর কি পুনরায় কল্যানের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ হাঁ, আসবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, সেই কল্যানের পর কি আবার অকল্যানের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ আসবে। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ তা কিভাবে? তিনি বললেনঃ “আমার পরে এমন কিছু ইমামের (শাসক) আগমন ঘটবে, তারা আমার প্রদর্শিত পথে চলবে না এবং আমার সুন্নাত (জীবন বিধান) গ্রহন করবে না। (অর্থাৎ তারা নিজেদের খোয়াল-খুশী মত চলার পথ আবিষ্কার করে নেবে)। অচিরেই তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক সমাজের নেতৃত্ব নিয়ে দাঁড়াবে যাদের মানব দেহে থাকবে শয়তানের অন্তর”।
আমি (হুজাইফা রাঃ) জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি সেই যুগে উপনীত হই তাহলে আমি কি করব?
তিনি (সাঃ) বললেনঃ “তুমি আমীরের নির্দেশ শোন এবং তার আনুগত্য কর। যদিও সে তোমার পিঠে আঘাত (নির্যাতন) করে এবং তোমার ধন-সম্পদ ছিনিয়ে নেয় তবুও তার কথা শোন এবং তার আনুগত্য কর”।
কিতাবুল ইমারাহ (প্রশাসন ও নেতৃত্ব) অধ্যায়,
সহীহ মুসলিমঃ ৪৫৫৪।
এটা মুসলিম শরীফের সহীহ হাদীস, খারেজীরা সেটা প্রাচীনকালের হোক আর বর্তমান যুগের, তারা ছাড়া আর কেউই এই হাদীসকে অস্বীকার করেনা। অথচ দেখুন হাদীসের বক্তব্য কত স্পষ্ট!
=> মুসলমানদের উপর কিছু নিকৃষ্ট শাসক আসবে যারা রাসুল সাঃ এর প্রদর্শিত পথে চলবে না এবং সুন্নাত (জীবন বিধান) গ্রহন করবে না।
=> তাদের কাজ-কর্ম এতো খারাপ হবে যে, রাসুল সাঃ তাদেরকে মানুষের দেহে শয়তানের অন্তর বলেছেন।
তবুও রাসুল সাঃ তাদের আনুগত্য করতে আদেশ করেছেন। তবে আনুগত্য শুধু ভালো কাজে, হারাম কোন কাজে আনুগত্য করাও হারাম। তবে কেউ যদি মনে যে, শাসকের এতো ক্ষমতা বা শাসক যদি হারামকে হালাল ঘোষণা করে তাহলে সেটকে সে হালাল বা হারামকে হালাল হিসেবে মনে করে তাহলে সে শাসককে আল্লাহর আসনে বসিয়ে শিরককারী মুশরেক হয়ে যাবে।
সর্বশেষ, সাইয়েদ কুতুব, জসীম উদ্দিন রাহমানী, আনোয়ার আল-আওলাকি, আনজেম চৌধুরী, মাগদিসি,জিব্রিল,কাতাদাহ ইত্যাদি বিভ্রান্ত লেখক ও বক্তারা কাফের দেশে বসে মুসলমান দেশের শাসকদেরকে কাফের ঘোষণা করে চরমপন্থী দলগুলোকে বিদ্রোহের দিকে উস্কে দিচ্ছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদেরকে জালেম শাসকদের যুলুম অত্যাচার ও রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কথিত জিহাদী আয়াম্মায়ে দ্বোয়াল্লিনরা।
সরকার যদি ক্বুরান ও সুন্নাহ দিয়ে দেশ পরিচালনা না করে, তাহলে তার অনুগত্য করারর হুকুম কি?
১. শিরক। তাগুতের অনুসরণ করার কারণে সেটা শিরক হবে।
২. হারাম
৩. জায়েজ
৪. কখনো আনুগত্য করা ফরয হবে, কখনো হারাম হবে কখনোবা সেটা শিরকও হতে পারে।
উত্তরঃ ৪. কখনো আনুগত্য করা ফরয হবে, কখনো হারাম হবে কখনোবা সেটা শিরকও হতে পারে।
ব্যখ্যাঃ মুসলমান হিসেবে কোন সরকার বা বিচারকের জন্য ফরয হচ্ছে আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ/বিচার পরিচালনা করা। তবে কেউ কখনো আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার না করলেই সে কাফের হয়ে যায়না, বরং তার আকীদা ও আমল অনুযায়ী সে ফাসেক/বড় গুনাহগার, জালেম হতে পারে আবার কখনো ইসলাম থেকে বের হয়ে কাফের-মুর্তাদ হতে পারে। এনিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য এই পোস্ট দেখুন –
কোন রাজা যদি ক্বুরান ও সুন্নাহ দিয়ে দেশ পরিচালনা না করে তাহলে সে ফাসেক জালেম কিন্তু সে যদি মুসলমান হয়ে থাকে, তাকে মুর্তাদ ঘোষণা করার মতো হুজ্জাহ বা স্পষ্ট প্রমান নেই। অবস্থা যদি এমন হয়, তাহলে এমন রাজা সে বড় জালেম হলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম, এ ব্যপারে ইজমা বা সমস্ত আলেমদের ঐক্যমত্য আছে। এটা মুসলমানদের আকীদা, কারণ মুসলমান শাসক জালেম হলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম, কারণ বিদ্রোহ করলে সমাজে ফাসাদ ও রক্তপাত আরো বেড়ে যাবে। একমাত্র খারেজীরাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের এই আকীদাহকে অস্বীকার করে।
শাইখুল ইসলাম, ইমাম আল বার্বাহারী (রহ:) বলেন, “যে ব্যক্তি মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, সে খারেজিদের মধ্যে একজন।”
শারহুস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা ১৪।
ইমাম আবু জা’ফর আহমাদ আত-ত্বাহাওয়ী (রহঃ), তার বিখ্যাত ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদার’ কিতাবে উল্লেখ করেছেন, “আমীর ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না, যদিও তারা অত্যাচার করে। আমরা তাদের অভিশাপ দিব না এবং আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নিব না। তাদের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যের সাপেক্ষে ফরয, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর অবাধ্যচরণের আদেশ দেয়। আমরা তাদের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য দো‘আ করব।”
আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া।
অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, এটা কি করে হতে পারে যে বাদশাহ ক্বুরান ও সুন্নাহ দিয়ে দেশ শাসন করেনা তবুও তার আনুগত্য করতে হবে??
এর জবাব হচ্ছে, এখানে আনুগত্য বলতে সেটা ভালো কিংবা জায়েজ কাজের ক্ষেত্রেই বোঝায়। হারাম কোন কাজে আদেশ দিলে সেটা বাবা-মা, বাদশাহ যেই দেক না কেনো, সেই আদেশ মানা যাবেনা। কিন্তু জায়েজ কাজে তাদের অনুগত থাকতে হবে, এটাই রাসুল সাঃ এর আদেশ, শাসকদের ব্যপারে ইসলামী দৃষ্টিভংগি। যেই হাদীস থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এই আকীদাহ প্রতিষ্ঠিত হয়ঃ
“হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ) বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এক সময় আমরা অকল্যাণ ও মন্দের মধ্যে (কুফরীর মধ্যে) ডুবে ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ আমাদেরকে কল্যাণের (ঈমানের) মধ্যে নিয়ে এসেছেন। এখন আমরা সেই কল্যাণের মধ্যে বহাল আছি। তবে এই কল্যাণের পরে কি আবার অকল্যাণের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আবার বললাম, সেই অকল্যানের যুগের পর কি পুনরায় কল্যানের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ হাঁ, আসবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, সেই কল্যানের পর কি আবার অকল্যানের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ আসবে। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ তা কিভাবে? তিনি বললেনঃ “আমার পরে এমন কিছু ইমামের (শাসক) আগমন ঘটবে, তারা আমার প্রদর্শিত পথে চলবে না এবং আমার সুন্নাত (জীবন বিধান) গ্রহন করবে না। (অর্থাৎ তারা নিজেদের খোয়াল-খুশী মত চলার পথ আবিষ্কার করে নেবে)। অচিরেই তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক সমাজের নেতৃত্ব নিয়ে দাঁড়াবে যাদের মানব দেহে থাকবে শয়তানের অন্তর”।
আমি (হুজাইফা রাঃ) জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি সেই যুগে উপনীত হই তাহলে আমি কি করব?
তিনি (সাঃ) বললেনঃ “তুমি আমীরের নির্দেশ শোন এবং তার আনুগত্য কর। যদিও সে তোমার পিঠে আঘাত (নির্যাতন) করে এবং তোমার ধন-সম্পদ ছিনিয়ে নেয় তবুও তার কথা শোন এবং তার আনুগত্য কর”।
কিতাবুল ইমারাহ (প্রশাসন ও নেতৃত্ব) অধ্যায়,
সহীহ মুসলিমঃ ৪৫৫৪।
এটা মুসলিম শরীফের সহীহ হাদীস, খারেজীরা সেটা প্রাচীনকালের হোক আর বর্তমান যুগের, তারা ছাড়া আর কেউই এই হাদীসকে অস্বীকার করেনা। অথচ দেখুন হাদীসের বক্তব্য কত স্পষ্ট!
=> মুসলমানদের উপর কিছু নিকৃষ্ট শাসক আসবে যারা রাসুল সাঃ এর প্রদর্শিত পথে চলবে না এবং সুন্নাত (জীবন বিধান) গ্রহন করবে না।
=> তাদের কাজ-কর্ম এতো খারাপ হবে যে, রাসুল সাঃ তাদেরকে মানুষের দেহে শয়তানের অন্তর বলেছেন।
তবুও রাসুল সাঃ তাদের আনুগত্য করতে আদেশ করেছেন। তবে আনুগত্য শুধু ভালো কাজে, হারাম কোন কাজে আনুগত্য করাও হারাম। তবে কেউ যদি মনে যে, শাসকের এতো ক্ষমতা বা শাসক যদি হারামকে হালাল ঘোষণা করে তাহলে সেটকে সে হালাল বা হারামকে হালাল হিসেবে মনে করে তাহলে সে শাসককে আল্লাহর আসনে বসিয়ে শিরককারী মুশরেক হয়ে যাবে।
সর্বশেষ, সাইয়েদ কুতুব, জসীম উদ্দিন রাহমানী, আনোয়ার আল-আওলাকি, আনজেম চৌধুরী, মাগদিসি,জিব্রিল,কাতাদাহ ইত্যাদি বিভ্রান্ত লেখক ও বক্তারা কাফের দেশে বসে মুসলমান দেশের শাসকদেরকে কাফের ঘোষণা করে চরমপন্থী দলগুলোকে বিদ্রোহের দিকে উস্কে দিচ্ছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদেরকে জালেম শাসকদের যুলুম অত্যাচার ও রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কথিত জিহাদী আয়াম্মায়ে দ্বোয়াল্লিনরা।
No comments:
Post a Comment