Tuesday, July 24, 2018

ঈমাম আলবানি রাহঃ কে কি মদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল?



আল্লামা আলবানী রহিমাহুমাল্লাহর ব্যাপারে অতিপ্রসিদ্ধ কথা হচ্ছে, তাঁকে মদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাদশাহ ফয়সাল বহিষ্কার করে দেন।

আমি এর সত্যতা জানার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু এর সত্যতা খুঁজে পাইনি।বরং এর উল্টো তথ্য পাই। তাহলো, তাঁকে বহিষ্কার করা হয়নি; বরং তাঁর সাথে চুক্তিকৃত মেয়াদ শেষ হলে তিনি চলে যান।আর এ তথ্য এমন একজন শাইখ দিয়েছেন যার বিশ্বস্ততার ব্যাপারে কারো সন্দেহ নেই। তাছাড়া তিনি তৎকালীন সময়ে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপ্রধান ছিলেন। এবং প্রধানের দায়িত্বও পালন করেন।তিনি হলেন বর্তমান সময়ের সুপ্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ হাফিযাহুল্লাহ।

তাঁর বক্তব্য নিম্নরূপ:
নিশ্চয় শাইখ আল্লামা মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দিন আলবানী রাহিমাহুল্লাহ সুন্নাহর খেদমাতে বিরাট অবদান এবং হাদীস জানার মাঠকে সহজকরণ, হাদীসের উৎস, সানাদ, মুতাবে', শাহেদ ও হুকুম বর্ণনার বদৌলতে ইনসাফওয়ালা লোকদের কাছে সুপরিচিত।

মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই তাঁকে তার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।এবং উচ্চ পরিষদের সদস্য হিসেবেও নির্ধারণ করা হয়। সৌদিআরবের বাইরের শিক্ষকদের চুক্তি শেষ হওয়া নিয়ামানুযায়ী তারও চুক্তি শেষ হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম। আমি একথা শুনিনি যে, বাদশাহ ফায়সাল রাহিমাহুল্লাহ শাইখ আলবানীকে বহিষ্কার করে দেয়।যেমনটি লেখকের ধারণা।

কিছু সদস্য মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উচ্চ পরিষদ গঠিত হয়। তাতে দশজন বাইরের দেশের সদস্য থাকে। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানের নির্বাচনের ভিত্তিতে তিন বছরের জন্য বাদশাহ নিয়োগ দেয়।

বাদশাহ ফায়সালের যুগ থেকেই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপ্রধানের দায়িত্বে ছিলাম।শাইখ আব্দুল আযীয বিন বায জামিয়ার দায়িত্ব ছেড়ে ১৩৯৫ হিজরীতে "ইদারাতুল বুহুস আল-ইলমিয়াহ ওয়াল ইফতা ওয়াদ দাওয়াহ ওয়াল ইরশাদে"র দায়িত্ব গ্রহণ করলে আমি চার বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দায়িত্বে ছিলাম।আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পরিষদের জন্য দশ সদস্য নির্বাচন করি। তাদের মাঝে শাইখ আলবানী রাহিমাহুল্লাহও ছিলেন।তাঁকে নিয়োগের ব্যাপারে কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। কিন্তু শাইখ আলবানী বেছে নেন তাঁর ইলম,তাঁর গুন ও তাঁর সাধনা সুন্নাহর খেদমাতে ব্যয় করার পথ।শেষ পর্যন্ত তিনি সুন্নাহর সাহায্যকারী, বিদ'আতের বিরোধী ও বিদ'আতীদের নিবারণকারী হয়ে যান। (আর-রাদ্দু আলার রেফায়ী ওয়াল বূতী, ৭৯-৮০)

শাইখ আল্লামা আব্দুল মুহসিন আব্বাদ হাফিযাহুল্লাহর ভাষ্য থেকে বুঝা যায়, আল্লামা আলবানী রাহিমাহুল্লাহকে বহিষ্কার করা হয়নি; বরং তাঁর সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে, তিনি চলে যান।আর সেসময় শাইখ আব্দুল মুহসিন আব্বাদ সহপ্রধান ছিলেন।তাই তাঁকে বহিষ্কার করা হলে তাঁর কাছে বিষয়টি অজানা থাকত না।

পরবর্তীতে শাইখ আব্দুল মুহসিন আব্বাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দায়িত্ব পেলে আল্লামা আলবানীকে তিনি উচ্চ পরিষদের সদস্য বানাতে চেয়েছিলেন। এমনকি এর কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছিল। এ থেকেও বুঝা যায়, তাঁকে বহিষ্কার করা হলে শাইখ আব্বাদকে প্রথমেই বাঁধা দেওয়া হত এ বলে যে, তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।তাই তিনি এ পদে অযোগ্য। কিন্তু তাঁকে বাঁধা দেওয়া হয়নি। তবে আল্লামা আলবানী এ পদ নেননি।

পুনশ্চ: কেউ তাঁর বহিষ্কারের বিষয়টি নির্ভরযোগ্য উৎসের আলোকে জেনে থাকলে জানিয়ে বাধিত করবেন।

No comments:

Post a Comment

আহ্লুস সুন্নাহ

▌বিবাহ : কিছু পরামর্শ - [ করনীয় ও বর্জনীয় ]

❒ প্রারাম্ভিকা, বর্তমানে যুবক যুবতীদের অবস্থা হল, তারা পাপাচার করেও পরিতৃপ্ত হচ্ছে না বরং পাপাচারের নিত্য-নতুন পদ্ধতি খুঁজে বেড়াচ্ছে।...