মাওলানা আব্দুল মালেক আল্লামা ইমাম আলবানী রহিমাহুল্লাহর বিরুদ্ধে জমিয়ে রাখা বিষ উদগীরণ করতে ও নিজের অন্তরের ঝাল মিটাতে তাঁর বিরুদ্ধে একটি প্রবন্ধ লিখে প্রকাশ করেন।যে প্রবন্ধ মাওলানা সাহেব অনেক ইলমী খিয়ানতের আশ্রয় নেন।যা জানলে একজন পাঠক মাথায় হাত দিবেন।আমরা সেসব ইলমী খিয়ানতের কয়েকটা এখানে উল্লেখ করবো। আর বাকীগুলো প্রায় ৩০-৩৫ পৃষ্ঠার প্রবন্ধে অন্য সময়ে প্রকাশ করবো, ইনশাআল্লাহ।
♣মাওলানা:আলবানী একজন থেকে শুধু প্রথাগত ‘ইজাযত’ গ্রহণ করেছেন।
♥খেয়ানত: তিনি তাঁর নাম উল্লেখ না করলেও তাঁর সম্পাদিত 'দলিলসহ নামাযের মাসায়েল' পৃষ্ঠা ৩৮৯ তে তাঁর নাম হাবীবুর রহমান আজমী বলা হয়েছে। মাওলানা সাহেবের এ দাবি ভুল প্রমাণের জন্য আরেকজনের নাম উল্লেখ করলাম, যার থেকে আলবানী ইজাযত নিয়েছেন।তিনি হলেন শাইখ রাগেব আত-তব্বাখ।দেখুন হায়াতুল আলবানী ৫০৯।
♣মাওলানা: 'সাকাতু আনহু' শব্দটি জারহ মুবহাম।কিন্তু তিনি তা জারহ মুফাসসার ঘোষণা দিয়ে অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন।
♥খেয়ানত: আল্লামা আলবানী বলেছেন ইমাম বুখারী সাকাতু আনহু বললে তা জারহ মুফাসসার হবে।তিনি আমভাবে বলেননি। অথচ মাওলানা সাহেব তা খেয়ানত করে আমভাবে প্রচার করেছেন।মাওলানা সাহেবের শিক্ষক আবু গুদ্দাহ বলেছেন ইমাম বুখারীর এই শব্দ প্রথম স্তরের জারহ। (আর-রাফঊ ওয়াত তাকমীল ৬৮)আর প্রথম স্তরের জারহ হল কাযযাব,ওয়াজ্জা', দাজ্জাল।(আর-রাফঊ ওয়াত তাকমীল ৭৩)আর এসব শব্দ জারহ মুফাসসার। তবে কেউ কাযযাব শব্দকে জারহ মুবহাম বলেছেন।তাই আলবানীর কথা একেবারেই সঠিক।
♣মাওলানা:ইরওয়াউল গালীলে'র ১/১৫৮ পৃষ্ঠায় অপবিত্র ব্যক্তি কুর'আন স্পর্শ করতে না পারার হাদীসকে আলবানী জঈফ বলেছেন।যা ইজমা' বিরোধী। ইজমা দেখতে ইবনু আব্দিল বার্র এর আল-ইস্তিযকার ১৮/১০ দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।
♥খেয়ানত:আল্লামা আলবানী হাদীসটিকে জঈফ বলেননি, সহীহ বলেছেন।ইবনু আব্দিল বার্রও ইজমার দাবি করেননি। বলেছেন জমহুর বা অধিকাংশের মত।
♣মাওলানা :আলবানী روي বা এজাতীয় মাজহুলের সিগাহ পেলেই সেই হাদীসকে জঈফ বলতেন।
♥খেয়ানত:আলবানী তা কখনই বলেননি। আলবানী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন:
لا،ولا يمكن أن نعده من جملة المصححين
অর্থাৎ এজাতীয় মাজহুলের সিগাহ পেলে জঈফ বলবো না।এবং সহীহ আখ্যাদাতা হিসেবেও গণ্য করবো না।(আদ-দুরার ফী মাসায়িলিল মুস্তালাহ ওয়াল আসার ১০৮)
♣মাওলানা: আলবানী তাকরীব,খোলাসা, মীযানুলসহ কয়েকটা কিতাব দেখেই সিদ্ধান্ত দিতেন।এর প্রমাণসসরূপ মাওলানা সাহেব তিন জন রাবীর নাম উল্লেখ করেন যাদের কারণে আলবানী ৩টি হাদীস জঈফ বলেছেন।১) আব্দুল্লাহ বিন যুগব, ২) ইয়াহইয়া বিন মালেক আল-আযদী ৩) সাঈদ বিন আশওয়া।
♥খেয়ানত: এই তিন রাবীর ব্যাপারে আল্লামা আলবানী পরবর্তীতে মত পরিবর্তন করেন।কিন্তু তা মাওলানা গোপন রেখে দিয়েছেন।প্রথম রাবীর ব্যাপারে মত পরিবর্তন জানতে সহীহাহ ৩/৭২, দ্বিতীয় রাবীর ব্যাপারে আর-রুওয়াতুল্লাযীনা তারাজ্জামা লাহুম আলবানী ৪/৪৩৪ আর তৃতীয় রাবীর ব্যাপারে জঈফাহ ৪/১১৯।
♣মাওলানা: আলবানীর কাছে জঈফ ও জাল হাদীস একই ছিল, পার্থক্য করতেন না।
♥খেয়ানত:আলবানী জঈফ+জঈফ মিলে হাসান লিগাইরিহি মানতেন।জাল ও জঈফ একই হলে একাজ করতেন না।তিনি ফাজায়েলে আমলের ক্ষেত্রে আসকালানীর তিন শর্তের আলোকে কেউ আমল করতে চায়লে ছাড় দিতেন।বিস্তারিত জানতে দেখুন তামামুল মিন্নাহ ও সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীবের ভূমিকা।আরও প্রমাণ হচ্ছে তিনি কিতাবের নাম রেখেছেন সিলসিলাতুল আহাদীসিজ জঈফাহ ওয়াল মাওজূ'আহ।তিনি একই মনে করলে এ নাম রাখতেন না।
♣মাওলানা: আলবানীর মতের বিরুদ্ধে ইসমাঈল আনসারী وصول التهاني باثبات سنية السبحة والرد علي الالباني কিতাব লিখেছেন।
♥খেয়ানত: ইসমাঈল আনসারী সালাফী আলেম হওয়াই উক্ত কিতাব তাঁর দিকে সম্পৃক্ত করেছেন।অথচ সে কিতাব সালাফী বিদ্বেষী আলেম মাহমূদ সাঈদ মামদূহ এর।
♣মাওলানা: নামাযের যে পদ্ধতি শায়খ আলবানী রহ. তাঁর কিতাব صفة الصلاة النبي صلي الله عليه و سلم এ উল্লেখ করেছেন একমাত্র একেই ‘নববী নামায’ আর হাদীস ও আসারের সুবিশাল ভাণ্ডারে নামাযের অন্য যেসব পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে সবগুলোকেই বিদ’আতী নামায ও রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত-বিচ্যুত নামায আখ্যা দেয়া
♥খেয়ানত: আলবানীর উক্ত বক্তব্য কোথাও পাওয়া যায়নি।
মশাআল্লাহ...
ReplyDeleteমাওলানা আবদুল মালেক সাহেবের কোন প্রবন্ধটির কথা বলছেন। লিংক দেয়া যাবে?
ReplyDelete