Tuesday, July 24, 2018

আল্লামাহ আলবানী রাহঃর উপর মাও.আব্দুল মালেক সাহেবের উদ্ভট অভিযোগের তাহক্বিক(পর্ব-০২)



৬ষ্ঠ অভিযোগ: আব্দুল মালেক সাহেব দাবী করেছেন আলবানী রহ: যঈফ ও জাল হাদীসের মাঝে পার্থক্য করেননা। আমি বলেছিলাম আলবানী জঈফ ও জাল হাদীসের মাঝে পার্থক্য করতেন। এর প্রমাণ তিন ভাবে দিয়েছিলাম।১) তিনি জঈফ +জঈফ মিলে হাসান বলতেন ২)ফাজায়েলে আমলের ক্ষেত্রে আসকালানীর তিন শর্ত অনুযায়ী জঈফ হাদীসের প্রতি আমল করতে বাঁধা দিতেন না।৩)তার কিতাবের নাম দিয়েছেন "সিলসিলাতুল আহাদীসিজ জঈফাহ ওয়াল মাওজূ'আহ।

প্রথম প্রমাণের জবাবে পোস্টদাতা মাসুদ ভাই লেখেছেন, " এবার দেখুন, আলবানি যইফকে মানতেন প্রমাণ করতে গিয়ে পোস্টদাতা কেমন চালাকিটা করলেন। তিনি বললেন, "আলবানী জঈফ+জঈফ মিলে হাসান লিগাইরিহি মানতেন।" আরে ভাই, যইফ-যইফ মিলে তো সেটা হাসানই হয়ে গেল। যইফ তো আর রইলো না। অভিযোগ তো যইফকে নিয়ে। এখানে তো হাসান হাদিস নিয়ে কোন অভিযোগ করা হচ্ছে না।
এই সূক্ষ্ম জিনিসটা সাধারণ মানুষের কাছে ধরা পড়ার কথা না।"

 জবাব: কী আজীব উস্তিদলাল! তার এই ইস্তিদলাল দেখে আমার হাসি পেয়েছে। তিনি কি উলুমে হাদীসের নুন্যতম জ্ঞানও রাখেননা। উলুমে হাদীসে জাল হাদীসের সাথে শতটা জাল হাদীস যুক্ত হলে তা জাল হাদীসই থাকে। কিন্তু যঈফ হাদীসের সাথে যঈফ হাদীস যুক্ত হলে তা কখনো হাসানে পরিণত হয়। যদি আলবানী রহ: জাল ও যঈফ এক মনে করতেন তাহলে কখনোই যঈফ+যঈফ = হাসান বলতেন না।কেননা তার নিকটে যঈফ যদি জাল হয় তাহলে জাল+জাল = হাসান কখনোই হয়না। আর তিনি যদি জাল ও যঈফকে এক মনে করতেন তবে জাল+জালকে= হাসান বলতেন। তিনি যঈফ+যঈফ = হাসান বলেছেন বহু হাদীসকে যা জলন্ত প্রমাণ বহন করে যে তার নিকটে যঈফ ও জাল হাদীছ এক ছিল না। যদি পোস্ট দাতা নুন্যতম ইলমে হাদীসের জ্ঞান রাখার দাবী করেন তাহলে তার জন্য জরুরী হবে, এমন একটা প্রমাণ দেখানো যেখানে জাল+জাল আলবানী রহ: হাসান বলেছে। তাহলে তার দাবী প্রমাণিত হবে যে আলবানী রহ: -এর নিকট জাল ও যঈফ হাদীস একই।

পোস্টদাতা  ৩য় প্রমাণের জবাবে আমাদের দলীলকেই নিজের দলীল বানিয়েছেন। তার দাবী হচ্ছে, " আ: মালেক সাহেব উভয়টা একই শ্রেণীভুক্ত করার অভিযোগ করেছেন। যার বড় প্রমাণ হল যইফ ও মওযুকে এক সাথে এক কিতাবে স্থান দেওয়া।"

 জবাব: আব্দুল মালেক সাহেব ও পোস্টদাতা দুইজনের-ই দলীল একটাই কেন তিনি যঈফ ও জাল হাদীসকে একই কিতাব ‘সিলসিলাতুল আহাদিছিয-যঈফা ওয়াল মাওযুয়া’ তে একত্রিত করলেন? এর জবাবে আজকে প্রথমে বলতে চাই। জাল আর যঈফ হাদীস যেমন এক নয় তেমনি যইফ ও মিথ্যুক রাবী এক নয়। কিন্তু আমরা দেখতে পাই অগণিত মুহাদ্দিস তাদের জারাহ ও তাদীলের বইয়ে যঈফ ও মিথ্যুক রাবী সকলকেই এক বইয়ে অর্ন্তভূক্ত করেছেন। যুয়াফা ওয়াল মাতরুকীন নামে নাসায়ী, দারাকুতনী ও ইবনুল জাওযী সহ অনেক মুহাদ্দিছ কিতাব লিখেছেন। সেই কিতাবে তারা যঈফ রাবী ও মিথ্যুক রাবী উভয়কে একত্রিত করেছেন। তাহলে তারা কি যঈফ ও মিথ্যুক রাবীর মধ্যে পার্থক্য করতেন না? আব্দুল মালেক সাহেব ও পোস্ট দাতার দাবী অনুযায়ী তো তাই বলতে হয়।
মাওলানা সাহেব ও পোস্টদাতাকে বলতে চাই, আলবানী তো আর তার বইয়ের নাম শুধু যঈফ বা শুধু মাওযু রাখেননি। তিনি বলেছেন যঈফ ও জাল হাদীসের সমাহার। যদি তিনি এক মনে করতেন তাহলে হয়  শুধু যঈফ বা শুধু জাল নাম রাখতেন। শুধু তাই নয় তিনি কিতাবের মধ্যে হুকুম লাগানোর ক্ষেত্রে হয় সব হাদীসকে যঈফ বলতেন অথবা সব হাদীসকে জাল বলতেন। কিন্তু তিনি যে হাদীস যঈফ তাকে যঈফ বলেছেন। যে হাদীস জাল তাকে জাল বলেছেন। যদি তার নিকটে যঈফ ও জাল একই হত তাহলে তিনি তা করতেন না। এই ছোট্ট ও একদম মোটা দাগের কথাটা কিভাবে মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব ও পোস্ট দাতা বুঝতে পারেন না তা আমাদের বুঝে আসেনা। না বুঝেও শুধু প্রতিহিংসাবশত এই কাজ তা মহান আল্লাহই অবগত।

No comments:

Post a Comment

আহ্লুস সুন্নাহ

▌বিবাহ : কিছু পরামর্শ - [ করনীয় ও বর্জনীয় ]

❒ প্রারাম্ভিকা, বর্তমানে যুবক যুবতীদের অবস্থা হল, তারা পাপাচার করেও পরিতৃপ্ত হচ্ছে না বরং পাপাচারের নিত্য-নতুন পদ্ধতি খুঁজে বেড়াচ্ছে।...